বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুলনা শহরের জনগণের অভিযোগ পরিসংখ্যানের দিক থেকে আমরা যত সংখ্যক মানুষ এখানে বসবাস করি তুলনামূলক তার থেকে অধিক পরিমাণে ইজিবাইক যেন আমাদের প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা দিচ্ছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে দক্ষিণ বাংলার খুলনা জেলা শহরের অন্যতম প্রবাহিত রুপসা ও আঠারোবেকি নদীর কোল ঘেঁষে ৪৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ জনসংখ্যা এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল রেলস্টেশন বিনোদন কেন্দ্র শিল্পকলা একাডেমী এবং বহু মার্কেট শপিং মল তাছাড়া শিল্প অঞ্চল খুলনা এলাকা জুড়ে রয়েছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান আর এসব কিছু নিয়েই খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকা গড়ে উঠেছে।
তার মধ্য আবার অঘোষিতভাবে লাইসেন্সবিহীন বিদ্যুৎ খেকো পরিবেশ দূষণ কারী ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ব্যস্ততম এই ঘিঞ্জি শহরে প্রতিনিয়ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার অবৈধ লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক।
সাথে রয়েছে প্রায় লাখের কাছাকাছি তিন চাকার রিক্সা আর সবকিছু মিলে যানজটের নাগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা শহর।
বিশেষ করে থ্রি হুইলার ও ইজি বাইকের
চালকরা একেবারে অনভিজ্ঞ যারা গাড়ি চালানোতো দূরের কথা ঠিক ভাবে ট্রাফিক আইন সম্বন্ধেও একেবারে অজ্ঞ জারকারণে নগরীর প্রধান প্রধান এলাকা জুড়ে সারাদিনই লেগে থাকে তীব্র যানজট পাশাপাশি দুর্ঘটনা তো রয়েছেই।
বিশেষ করে ইজিবাইক দ্বারা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় কবলিত হচ্ছে কমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।
তবে এ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে নগর ভবনের দায়িত্ববান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং কেএমপি কমিশনার যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা বৈঠকের মাধ্যমে এই পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইজি বাইকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করে লাইসেন্স বন্ধসহ নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পথচারীদের দুর্ঘটনার কবল থেকে বাঁচাতে সঠিক পরিকল্পনামাফিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তারা এ সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তবে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও শহরব্যাপী রীতিমত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ইজিবাইক থ্রি হুইলার ও তিন চাকার ইঞ্জিন চালিত রিক্সা।
অথচ তার কোনো প্রতিকার স্বরূপ কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি আজ পর্যন্ত।
তবে এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্তারা বিশেষভাবে ইজি বাইকের লাইসেন্স বন্ধসহ যে সকল অবৈধ লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক রয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে চলাচল নিষিদ্ধ করার কথা থাকলেও গোপনে বেশ কিছু লাইসেন্স নবায়নও করেছে সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স বিভাগের কর্তৃপক্ষ। তবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স শাখার বরাতে প্রথম ধাপে ৭ হাজার ৮ শত ৯৬ টি ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও লাইসেন্স শাখার সংশ্লিষ্ট অন্য আরেক কর্মকর্তার তথ্য উঠে এসেছে তার চতুরগুণ সংখ্যা।
আর এতে উল্লেখ থাকে যে খুলনা শহর জুড়ে লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্সবিহীন সর্বমোট ২০ থেকে ২৫ হাজার ইজিবাইক চলছে।
অথচ সরজমিনে দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র।
এদিকে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া গল্লামারি নিরালাসহ শহরের আশপাশ এলাকা জুড়ে ছোট বড় চার্জিং পয়েন্টে রয়েছে একশতর উর্ধ্বে আর এ সকল চার্জিং পয়েন্ট গুলো অধিকাংশই সনাতন পদ্ধতিতে বিলিং সিস্টেম চালু থাকায় এলাকাভিত্তিক পিডিবির ইঞ্জিনিয়ার ও প্রতিটি চার্জিং পয়েন্ট এর মালিকদের সাথে গোপন সখ্যতা থাকায় সরকারের অর্থব্যয়ের মাধ্যমে উৎপাদিত পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ হচ্ছে দুই নাম্বারি।
ফলে সরকারের বিদ্যুৎ খাতে গুনতে হচ্ছে লুকসান।
আর এই চার্জিং পয়েন্টের হিসাব অনুযায়ী হিসাব করলেও প্রতিদিন নগরীতে ইজিবাইক চলছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার।
অপরদিকে শহরের স্থানীয় অধিকাংশ ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ আমাদের নগরজুড়ে যতগুলো ইজিবাইক দেখছেন তার অধিকাংশই শহরের বাইরে ডুমুরিয়া, ফুলতলা, রুপসা, পুটিমারি, বটিয়াঘাটাসহ অন্যান্য এলাকা থেকে হাজার হাজার ইজিবাইক সকাল হলেই প্রতিনিয়ত ঢুকছে খুলনা শহরে।
আর বহিরাগত যেসকল ড্রাইভাররা গাড়ি নিয়ে শহরে ঢুকছে তাদের ট্রাফিক আইন ও ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও উঠে এসেছে প্রশাসনিক কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের গোপনে ড্রাইভারদের থেকে উৎকোচ গ্রহণ করার কারণে আনফিটনেস অচল এবং লাইসেন্স বিহীন অনভিজ্ঞ ড্রাইভাররা অনায়াসে চালাচ্ছে গাড়ি।
সবকিছু মিলে প্রদীপের নিচেয় অন্ধকার থাকায় কোনো প্রতিকার হচ্ছে না বলে নগরীর ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।