মোঃরিপন রেজা স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও প্রতিবাদ সভায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজত ইসলামের সাবেক যুগ্ন মহাসচিব আল্লামা মুফতি মামুনুল হক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন-এদেশ হতে ভারতে গিয়ে থাকেন কিন্তু আপনি যদি মনে করে ভারতে বসে এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নরেন্দ্র মোদীদের মাধ্যমে তাদের স্বার্থের রুটম্যাপ বাস্তবায়ন করবেন,তাহলে মনে রাখতে হবে-১৯৭১ সালে যাদের নেতৃত্বে ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো তাদেরও কিন্তু এই স্বাধীন দেশে ঠাঁই হয় নাই,এবং চলতি২০২৪ সালে নব্য ফ্যাসিবাদের জায়গা এ বাংলাদেশে হয় নাই।ভবিষ্যতেও যদি কেউ এদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়,তাহলে দেশের আলেম সমাজ,ছাত্র সমাজ সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এমন দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে যে বাংলাদেশের মানুষ আর কোন দিন এ দেশে ফ্যাসিবাদ আসতে দেবে না।বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর ঈদগাঁহ মাঠে খেলাফত মসলিস সোনারগাঁ শাখার আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের রূহের মাহফিরাত কামনা ও প্রতিবাদ সভায় আল্লামা মামুনুল হক এসব কথা বলেন।তিনি বলেন,বাংলাদেশে বসবাস করতে হলে ও রাজনীতি করতে হলে এ দেশের মানুষের পালস্ বুঝতে হবে,আবেগ বুঝতে হবে।ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে দীর্ঘ দিন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা যাবে কিন্তু, চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকা যাবেনা। শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদী আশ্রয় দিয়েছেন আমাদের আপত্তি নাই।এটা ভারতের আভ্যন্তরিন ব্যাপার।প্রয়োজনে শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সকলকে সদস্য ভারতে নির্বাসিত হোক আমাদের আপত্তি নাই।কিন্তু দিল্লীতে বসে বাংলাদেশের আভ্যন্তরিন বিষয় নিয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করলে এদেশের আঠারো কোটি মানুষ যুদ্ধের ময়দানে নামবেন।তিনি আরও বলেন,যাদের অত্যাচার অবিচার মাত্রাতিরিক্ত ছিল তাদের বিষয়ে মহানবী ঘোষণা করেছিল তাদের কোন ক্ষমা নাই।সোনারগাঁয়ের শত শত মানুষের নিপীড়নের জন্যে ব্ল্যাক লিস্ট করতে হবে।সোনারগাঁয়ে অপকর্মের জন্য চিহিৃত কিছু মানুষ দায়ী দাবী করে মামুনুল হক বলেন, সে সকল চিহিৃতদের সোনারগাঁয়ে চিরদিনের জন্য অবাঞ্চিত ঘোষণা করতে হবে।সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে জালিম সরকার আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন,ঐ জালিম সরকার প্রায় ১৬টি বছর দেশের মানুষকে সবদিক দিয়ে কুক্ষিগত করে রেখেছিলো।অনেকে ধারণাই করেছিলো এই জালিম সরকারকে হঠানোর মতো বা অপসারণের মতো কোন শক্তি নেই।তিনি বলেন,ঐ জালিম সরকারের লক্ষ্য ছিলো, হাজার-লাখ মানুষকেও যদি হত্যা করতে হয়, তারা করবে।তারপরেও তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবে।কিন্তু যখন তাদের পাপের বোঝা পরিপূর্ণ হয়েছে তখন ঠিকই আল্লাহ বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের দিয়ে তাদের অপসারণ করিয়েছেন।তিনি বলেন,২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট বাংলাদেশ পূণরায় যে স্বাধীন হয়েছে সে স্বাধীনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা, এ স্বাধীনতা নব্য আত্মবিশ্বাসীদের স্বাধীনতা, এ স্বাধীনতা জিম্মিকারীদের নীল নকশা ভন্ডুল করার স্বাধীনতা।মামুনুল হক বলেন,এই স্বাধীনতার পিছনে অনেক সংগ্রামী ইতিহাস রয়েছে।অনেক মা-বোনের চোখের অশ্রু রয়েছে।রয়েছে অনেক ভাইদের রক্ত। যে সকল শহীদরা এই সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন তাদের অবশ্যই জাতি সারা জীবন মনে রাখবে বলে তিনি আশা করেন।মানুষ তাদের অনেক কর্মফল পৃথিবীতেই পেয়ে যাবেন যা হাদিসে আছে জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের কর্মফল দেশের মানুষ দেখেছে,পুরো পৃথিবী দেখেছে।তাদের কর্মদোষে শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙ্গে তার ওপর প্রম্রাব করেছে নির্যাতিত মানুষ। তিনি আরো বলেন,শেখ হাসিনা দেশের জনগণের যে টাকা দিয়ে হেলিকপ্টার কিনেছিলেন দেশের মানুষের সেবা করার জন্যে,২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সেই হেলিকপ্টার দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে পাখির মতো মানুষ মেরেছেন।বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সভায় উপস্থিত হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সভায় খেলাফত মজলিস সোনারগাঁ শাখার সভাপতি হাফেজ ক্বারী মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন-সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন,কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফেজ মাওলানা মহিউদ্দিন খান,সংগঠনটির সোনারগাঁ থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক প্রমূখ।