পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে নীলফামারী ৩ আসনের সাবেক সাংসদ মেজর রানা এবং জেমকন গ্রুপের মালিক ও যশোর ৩ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদের অবৈধ দখল হতে ভূমি উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলার ভূক্তভোগী সাধারণ বাসিন্দা গণের ব্যানারে জেলা জজ কোর্ট এলাকা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন ভূক্তভোগীরা। এ সময় তারা মেজর রানা ও জেমকন গ্রুপের মালিক কাজী নাবিল আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভূমি দখল, মামলা দিয়ে স্থানীয়দের হয়রানি, মন্দির দখল, নদীর দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন ভুক্তভোগীরা। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী আলী আমজাদ, মাহজেবিন মনসুর, মুসলেহার রহমান প্রধান ফুলু, মোফাজ্জল হক, বিরেন্দ্রনাথ সিংহ, মখলেসুর রহমান প্রধান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে জেলার তেতুঁলিয়া, সদর ও আটোয়ারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ভুক্তভোগী অংশগ্রহণ করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে নীলফামারী ৩ আসনের সাবেক সাংসদ মেজর রানা পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া, আটোয়ারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নামমাত্র মূল্যে অল্প পরিমাণের জমি কিনে চা বাগানের নামে মানুষের একরের পর একর জমি দখল করে নিয়েছেন। সদর ও আটোয়ারী উপজেলায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মন্দিরের জমি নিজের দাবি করে দখলে নিয়ে তালা মেরে দিয়েছেন। পরে পূজা আর্চনা বন্ধ করে দেন তিনি। এছাড়া যশোর ৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও জেমকন গ্রুপের মালিক কাজী নাবিল আহমেদ পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলায় নামমাত্র দামে ২০ বছর আগে জমি কেনা শুরু করে চা বাগান করেন। জমি কেনার পর থেকেই তারা বেপরোয়া হয়ে মানুষের জমি দখল শুরু করেন। তাদের এ কর্মকা-ে এলাকার মানুষজন অতিষ্ঠ। প্রতিবাদ করতে গেলে বিভিন্ন সময়ে দেয়া হতো মামলা। বতর্মানে ৫০০ টির বেশি মামলা দেয়া হয়েছে স্থানীয়দের নামে। থানায় ভূক্তভোগীরা তাদের নামে কোন মামলাই করতে পারেনি। হামলা ও নির্যাতন তো নিত্যদিনের ব্যাপার ছিল। জেমকন গ্রুপের এলিন, হাফিজ, রশিদ, তাহেরের নেতৃত্বে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী আমাদের উপর হামলা করত। আদালতে এই দুই এমপির বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না। তাদের পক্ষে অনেক বড় বড় উকিল দাড় করানো হতো। আমরা আদালতে কোন পাত্তাই পেতাম না। এই দুই সাবেক এমপি মিলে ৫০০ একর জমি কিনলেও মানুষের ১৩০০ একর জমি দখল করেছেন। বক্তারা অবিলম্বে এই দুই সাবেক এমপির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, ভুক্তভোগীদের জমি ফিরিয়ে দেয়া, তাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা সহ দুই এমপির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
পরে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন ভুক্তভোগীরা। এসময় স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল কাদের। পরে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি পাঠানো সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
এবিষয়ে জেমকন গ্রুপের ল্যান্ড এন্ড লিগ্যাল ম্যানেজার কামাল পারভেজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন। পরে একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।