পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদ মাঠে ফিতা কেটে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম।
মেলায় এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘ফলেপুষ্টি অর্থ বেশ, স্মার্ট কৃষির বাংলাদেশ’ মেলা (২৫-২৭ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় আগত দর্শণার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি ও বিভিন্ন ফল সম্পর্কে জানতে পারবেন। মেলায় মোট ৮টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফলচাষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন এর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ প্রধান শুভ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগম প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান মানুষ জন খুব বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে, নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে। সারা পৃথিবী দেখলো করোনাভাইরাসের দাপট, একটা ভাইরাস আসলে কিন্তু অনেক গুলো ভাইরাস রেখে যায় ভাইরাসের নিয়মই এটি। আগের দিনের মানুষের কোথাও কেঁটে গেলে দূর্বাঘাস চিবিয়ে লিগিয়ে দিতো কিন্তু বর্তমান কোনো খেলোয়াড় আঘাত পেলে স্প্রে করে, বরফ লাগায় এটিও সাইন্টিফিক কিন্তু আমাদের সময় আমরা ছিলাম প্রাকৃতিক নির্ভরশীল।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সময় রাস্তার পর্শ্বে ছিলো জামগাছ, কাঁচামিঠা আমগাছ কিন্তু বর্তমানে এগুলো নেই। আমাদের ছোট বেলায় কিন্তু এত বড়বড় রোগ হতো না কিন্তু এখন হচ্ছে। বর্তমানে আমরা বাচ্চাদের ঘাসে নামতে দেই না। এখন বাচ্চাদের অল্প জ্বর হলেই চিকিৎসক এর কাছে নিয়ে যায়। আগে জমিতে একটি ফসল হতো কিন্তু এখন জমিতে ৩-৪ টি ফসল হয়, আসলে সবই টেকনলোজি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমাদের দেশি ফলের গাছ বেশি বেশি রোপণ করতে হবে। আমাদের দিনাজপুরের যে লিছু তা কিন্তু সারাদেশে বিখ্যাত। আমাদের দিনাজপুরে লিচু কিন্তু এখন ফ্রান্সে রপ্তানি হচ্ছে। আমাদের দেশি ফলগুলোতে প্রচুর পরিমানের পুষ্টিগুণ রয়েছে। এগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে আরো বেশি বেশি জানাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ প্রধান শুভ বলেন, দেখুন আমাদের পাশ্ববর্তী জেলা দিনাজপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত এমন আমাদের পঞ্চগড় জেলা কোন ফলের জন্য এখনো বিখ্যাত হতে পারেনি। তিনি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে বলেন আমদের ফলের জন্যও বিখ্যাত হতে হবে, আপনারা সেভাবে কাজ করুন এবং কৃষকের উৎসাহিত করুন, আমরা আপনাদের সাথে আছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, জাতীয় ফল মেলা আসলেই এটি খুবই ভালো উদ্যোগ, এই মেলার মধ্যে মানুষ বিভিন্ন ফল সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমরা আসলেই অনেক ফলের গুণাগুণ সম্পর্কে জানিনা। আমরা বাজার থেকে কমলালেবু, মাল্টা কিনে খাচ্ছি কিন্তু দেখুন আমাদের বাড়ির ঘরের পাশেই জাম্বুরা ধরে গাছে পেকে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আমরা তা পেড়ে খাচ্ছি না। এই জাতীয় ফল মেলার আয়োজনের লক্ষ হচ্ছে দেশি ফলগুলো মানুষের মাঝে পরিচিত করে তোলা এবং এদের গুণগত মান সম্পর্কে সকলকে জানানো।
জেলা কৃষক সম্প্রসারণ কতৃক আয়োজিত জাতীয় ফল মেলার আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসক সহ উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ সবকয়টি স্টল ঘোরে দেখেন।