– আবুজার গিফারী, বেড়া উপজেলা প্রতিনিধি।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা চেতনা, ধ্যান- ধারণা পাল্টাচ্ছে অবিরাম। আর হর হামেশাই আমরা দেখতে পাচ্ছি কৃষি ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ। প্রযুক্তির এই নতুন নতুন ব্যবহার পাল্টে দিচ্ছে সফলতার দ্বার। বাংলাদেশের কৃষিতে ব্যাপক সফলতা সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পাবনার ঘি উৎপাদন স্বাদে ও মানে দেশে-বিদেশে এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। এখানেও লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
গতকাল দুপুরে ষড়যমীনে গিয়ে দেখা গেল পাবনার বেড়া উপজেলার মালদা পাড়া গ্রাম, সেখানে চলছে ঘি উৎপাদন।চারজন শ্রমিক এই খরতাপের মধ্যে ঘি উৎপাদনে খুবই ব্যস্ত। এই কারখানাটির মালিক ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষ।
চারজন শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের টিম লিডার জনাব আনিসুর রহমান প্রামানিক। আনিসুর জানালেন, আগে এক মন দুধ থেকে ক্রিম আলাদা করতে সময় লাগতো ১২ মিনিট ম্যানুয়ালি বর্তমানে সেখানে এক মন দুধ থেকে ক্রিম আলাদা করতে সময় লাগছে মাত্র ৫ মিনিট। এটা সম্ভব হচ্ছে মিল্ক ক্রিম সিপারেটর মেশিনের মাধ্যমে। এই মেশিনটি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে ইনস্টল করা হয়েছে, যা কিনা একদম বিনামূল্যে। ইতিমধ্যেই বেড়া উপজেলায় ছয়টি মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এই মিল্ক ক্রিম সিপারেটর মেশিনের কার্যক্ষমতা ১২ মন থেকে ২৭ মন দুধ, প্রতিদিন। এই মিল্ক ক্রিম সেপারেটর মেশিনে দুধ দেওয়ার পরপরই তা একদিকে ননী এবং অন্যদিকে ফ্যাট ফ্রি মিল্ক আলাদা হয়ে যায়। এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ননী থেকে ঘি এবং ছানা থেকে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি উৎপাদন হচ্ছে। সাথে সাথে গ্রামীণ অর্থনীতিও হচ্ছে মজবুত।ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষ এক প্রশ্নের জবাবে জানালেন যে, এক মন দুধ থেকে এক কেজি ৪০০ গ্রাম ঘি পাওয়া যায় এবং ৮ কেজি ছানা পাওয়া যায়। ঈশ্বর চন্দ্র আরও জানালেন যে প্রায় সাড়ে তিন বছর যাবত মিল্ক- ক্রীম সেপারেটর মেশিন ব্যবহার করে তিনি এই ব্যবসায় উন্নতি করেছেন।
সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেড়া। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন যে, বর্তমান সরকার কৃষক ও খামারীদের প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এ ধরনের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার খুবই যত্নবান, যার সুফল ধীরে ধীরে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।