মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলায় অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় শ্বাসরোধে হত্যার ২৩ দিন পর মায়ের ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা মর্জিনা খাতুন (৩৪) নামে এক স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২২ জুলাই ) বিকেল ৩ টায় ধুনট থানা পুলিশ উপজেলার চান্দারপাড়া গ্রামে মায়ের ঘরের মেঝে খুড়ে মর্জিনা খাতুনের লাশটি উদ্ধার করে। নিহত মর্জিনা খাতুন চান্দার পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের মেয়ে। তবে, এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত মর্জিনার মা রওশনারা বেগমকে (৫৫) আটক করেছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , মা রওশনারা ছেলে রাব্বি ইসলাম (২১) এবং ছেলে বউ নুপুর খাতুনকে (১৮) নিয়ে মর্জিনার একান্ন পরিবারভুক্ত সংসার। সহায় সম্বল বলতে সামান্য বসতভিটা। তাদের চার সদস্যর অভাব অনটনের সংসার। জীবিকার তাগিদে তারা নানান অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি রওশনারার অসুস্থতার কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। তার পক্ষে আর অনৈতিক কাজ করা সম্ভব হয় না। এতে পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয় নিয়ে প্রায় চার মাস ধরে তাদের সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে মর্জিনাকে ফের অনৈতিক কাজের জন্য চাপ দেয়। কিন্ত সে রাজি না হওয়ায় ৩ মাস আগে মর্জিনাকে তারা মারপিট করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে মর্জিনা। তারপরেও পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করলেও মর্জিনা রাজি হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩০ জুন মর্জিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তার মা, ছেলে ও ছেলে বউ। মর্জিনার মৃতদেহ রওশনারার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।
হত্যাকান্ডের পরের দিন ঘরে তালা লাগিয়ে রওশনারা, রাব্বি ও নুপুর বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়। হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন নিরুদ্দেশ হওয়ায় গ্রামবাসীর মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ হলে আজ শনিবার সকালে নিহত মর্জিনার মাকে ঢাকা থেকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে রওশনারার দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী মর্জিনার লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের ছেলে রাব্বি ইসলাম ও ছেলে বউ নুপুর খাতুন পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন , গ্রামবাসীর দেওয়া তথ্যমতে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। নিহত মর্জিনার মা রওশনারা কে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।