মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি-
বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা সহ আশেপাশের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে বিক্রি হচ্ছে মানহীন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের রকমারি বাহার।
পথের ধারে খোলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে বিক্রিত হচ্ছে ফুসকা, ভাজা পুরি, চিকেন ফ্রাই, টিক্কা, কাবাব, বার্গার, স্যান্ডউইচ, সামুচা, সিংগারা, আলুর চপ, পুরি, পিয়াজু, নুডুলস সহ হরেক রকমের খাবার। যা তৈরী করা হচ্ছে ভেজাল তেল ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। এ সকল খাবার গুলোতে যেমন কোন মান নেই, তেমনি মানুষের খাবারের জন্য অনুপোযোগী। ফুটপাতের এই অস্বাস্থ্যকর খাদ্য সাধারন পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা খাওয়ার ফলে দিন দিন নানান ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রাথমিক অবস্থায় পেট ব্যাথা ও মাথা ব্যাথা দেখা দিলেও পরবর্তীতে ধাপে ধাপে তা ভয়ংকর অসুখের দিকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটায়। শহরের পথে ঘাটে, স্কুল, কলেজ গুলোতে পথের সামনে দাঁড়িয়ে হকারদের বিক্রিত খাবার গুলো অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশ, মানহীন অবস্থায় রাখায় ব্যাক্টেরিয়া যুক্ত খাবারের সৃষ্টি হয়। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে এমন অনিরাপদ খাবার বেচাকেনা হলেও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্ব থাকলেও তাদের মাঠপর্যায়ে তেমন কোনো তদারকি কার্যক্রম নেই।
কোনো কর্তৃপক্ষের কাছেই রাস্তার খাবার বিক্রেতাদের কোনো তালিকা নেই। খাবারের মান তদারকির দায়িত্বে থাকা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমও রাস্তার খাবারের ক্ষেত্রে একেবারেই সীমিত।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফুটপাতের এসকল খাবারগুলিই যদি মানসম্পন্ন ও স্বাস্থ্যকর ভাবে পরিবেশনে হকারেরা হাতে গ্লাস ও মাথায় মফ ক্যাপ ব্যবহার করে এবং খাবার তৈরী ও বিক্রিতে নির্ভেজাল প্রক্রিয়ায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করে, এতে সাধারণ মানুষ অনেকটাই বিভিন্ন রোগ আক্রামন থেকে ঝুকিঁমুক্ত থাকবে।
তবে, এ প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ শফিউল আজম জানান, ফুটপাতে বিক্রিত এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেটের পীড়া দেখা দেয়। কিন্তু এসব খাদ্য থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে প্রতিটা জেলা উপজেলা ও সদরে মাঠ র্পযায়ে আমাদের হেলথ ইন্সপেকশন রয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম করা রয়েছে। যেখানে খাদ্য কিভাবে গ্রহন করতে হবে, খাদ্যের মান কেমন হবে। এটা নিয়ে সাবধান করা হয়। যা একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা ধীরে ধীরে নিরসন করা সম্ভব হবে। কিন্তু এরজন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বগুড়া জেলার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, ভেজাল খাবারের বিভিন্ন দোকান ও রেস্তোরাঁ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বগুড়া ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা আদায় সহ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করেছে।
জনস্বার্থে এরকম অভিযান সব সময় পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।