আব্দুল গাফফার শেরপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা অনার্স কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এমনকি তাঁরা ওই শিক্ষকসহ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ঘন্টাব্যাপি ওই কর্মসূচি চলাকালে মহাসড়কের উভয়পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আইনগত সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের শান্ত করেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, কলেজের কৃষি শিক্ষক মাহবুবুল আলম ছাত্রীদের পর্দায় থাকতে নিষেধ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় কোনো ছাত্রী নেকাব পড়ে কলেজে আসলে তিনি নিজ হাত দিয়ে খুলে দেন। এসময় কৌশলে ছাত্রীদের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন তিনি। এছাড়া ছাত্রীদের বিভিন্ন কায়দায় কাছে ডেকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেন ওই শিক্ষক। ফলে কলেজে ছাত্রীদের উপস্থিতি কমে গেছে। পাশাপশি তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিগত ২২ সেপ্টেম্বর ঘটনাটি জানিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেন কলেজের ছাত্রীরা। কিন্তু অদ্যবধি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বিচার ও অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন বলে জানান তাঁরা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন কৃষি শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কলেজের কিছু শিক্ষক ছাত্রীদের উস্কে দিয়ে তার বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছেন। এছাড়া তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষক মাহবুবুর রহমান।জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ছাত্রীরা আমার কাছে কোনো অভিযোগ না দিয়ে ইউএনও’ স্যারের নিকট অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসার করার কথা। কিন্তু হঠাৎ করে ইউএনও স্যার বদলি হয়ে যাওয়ায় পদক্ষেপ গ্রহণে একটু বিলম্বিত হলেও ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, সদ্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তাই অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।