মশিউর মিলন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
বাউফলের কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হঠাৎ করে প্রায় ২০-২২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বৃহষ্পতিবার (১ফেব্রæয়ারী) বেলা ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি গিয়েও একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদিকে অসুস্থ ১১জন শিক্ষার্থীকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলো কবিতা, হাসিবা, শ্রীময়ন্তী, মারিয়া, সেতু, ফাইয়না, সামিয়া, মারিয়া, জান্নাত, মাহিয়ানি, অন্নেশ্বা কর্মকার। ঘটনার সময় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষকই স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টার দিকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিফা আক্তার নূহা শ্রেণি কক্ষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পরপরই একই শ্রেণির অনিমা, ফাতেমা, মারিয়া, হাসিবা, পায়েল, শ্রীময়ন্তী, মরিয়ম, আজমিন এবং ৯বম শ্রেণির লিয়া লামিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় স্কুলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা যে যার মতো করে রিক্সা-অটোতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল। বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় শিক্ষার্থীদের কান্নাকাটি দেখে অভিভাবকসহ সাংবাদিকরা স্কুলে উপস্থিত হন। সেখানে দেখা গেছে, একাধিক শিক্ষার্থী মাঠে গড়াগড়ি করে কান্নাকাটি করছে। সহপাঠীরা মাথায় পানি দিচ্ছে। কেউ বাড়ি ফেরার জন্য রিক্সা খুঁজছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানান, সপ্তম শ্রেণি কক্ষে প্রথমে বিশ্রি গন্ধ পাওয়া যায়। এরপরই তাদের মাথা ঘুরাচ্ছিল, বমিবমি ভাব হচ্ছিল। এরপরই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বেলা ২টার দিকেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন চিকিৎসককে খবর দিয়ে স্কুলে আনেননি। এসময় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক পাঠান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা জানান, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককে জানালে তারা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে বেলা ৩টার দিকে বাড়ি পাঠানো ও স্কুল থেকে ১১জন শিক্ষার্থীকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর একটি সূত্র জানায়, ঘটনার দিন শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে প্রত্যাহিক সমাবেশ ও জাতীয় সঙ্গীত করানো হয়েছিল।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নতুল জানায়, ৭ম শ্রেণীর রুমে যাওয়ার পরে এমন গন্ধ পাই যেন মনে হয়েছিলো কেউ গলা চেপে ধরেছে। এমনটা মনে হয়েছে যেন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর কর্তব্যরত চিকিৎসক মারজান আফরিন দেশ চ্যানেলকে জানান, একজন শিক্ষার্থী হটাৎ করে শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হলে তার দেখাদেখি সহপাঠিরা অসুস্থ হয়ে পরে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অতিরিক্ত ভয়ভীতির কারনে এইচসিআর (হিস্টেরি কনভার্রসন রিয়েকশন) হয়েছে বলে ধারণা করছি।
কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনর রশদি বলেন, টিফিনের বিরতির সময়ে একটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরে তার দেখাদেখি অন্যান্য মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পরে। অসুস্থ মেয়েরা এখন ভালো আছে।
এদিকে ঘটনার সময় স্কুলের শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।