আবুজর গিফারী, উপজেলা প্রতিনিধিঃ
পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার আলহেরা একাডেমির অডিটোরিয়ামে ১৭ আগস্ট, ২০২৪, রোজ শনিবার, সকাল ৮ঃ০০ ঘটিকা হতে দিনব্যাপী বার্ষিক রোকন সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও পাবনা জেলা আমীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও পাবনা জেলা নায়েবে আমীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডাক্তার আব্দুল বাসেত খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও পাবনা জেলা কর্মপরিষদ সদস্য।
অনুষ্ঠানটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, মাওলানা আতাউর রহমান, আমীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বেড়া উপজেলা।
অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, দীর্ঘ ষোল বছর জগদ্দল পাথরের মত বাংলার জমিনে স্বৈরা শাসনের মাধ্যমে জুলুম নির্যাতন নিপীড়ন এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো যে অগণতান্ত্রিক শক্তি, তার বিদায়ের মাধ্যমে জাতি প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছে। বছরের পর বছর এই অপশক্তিকে সরানো যাচ্ছিল না, সে নানান অপকৌশল প্রয়োগ করে গুম, খুন ও ত্রাসের রাজত্ব অব্যাহত রেখেছিল। হঠাৎ করে আবাবিল পাখির মত আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য স্বরূপ ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটেছে সেই অপশক্তির।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক্তার বাসেত খান বলেন, দীর্ঘ ১৬ টি বছর পর এমন উন্মুক্ত পরিবেশে রোকন সম্মেলনে আমরা সবাই উপস্থিত হতে পেরেছি সেজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া, আলহামদুলিল্লাহ। বর্তমান এই প্রেক্ষাপটে এই সময় ইসলামের দাওয়াত মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিতে হবে। মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃংখল, ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে চায়। আল্লাহ প্রদত্ত কুরআনের বিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে রাষ্ট্রের সকল স্তর থেকে ঘুষ, দুর্নীতি, জুলুম, নিপীড়ন দূর করে একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন যুব সমাজ জেগে উঠেছে, বাতিলের বিরুদ্ধে জাতি সোচ্চার হয়েছে একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থার জন্য, সুতরাং আগামীর দিনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার এক সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে। জামায়াতের সকল রোকনদেরকে হতে হবে ইসলামের এক একটি সৈনিক। তাই আপনাদের কে বলবো, একটি মুহূর্তও নষ্ট করা যাবে না, প্রত্যেকটি মানুষের দ্বারে দ্বারে আপনাদের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে, আপনাদের চারিত্রিক গুণাবলী দ্বারা মানুষ কে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করতে হবে। দ্বীন কায়েমের এই চেষ্টার দ্বারা আপনি যদি দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তি নিশ্চিত করতে পারেন তাহলেই আপনি প্রকৃত অর্থে সফল।
সভাপতির বক্তব্যে আতাউর রহমান বলেন, একটি বিল্ডিং যেমন একটি কাঠামোর উপরে দাঁড়িয়ে থাকে, রোকনরা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর সেই কাঠামোর মত। যদি কাঠামো দুর্বল হয় সে বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ে, সুতরাং জামায়াতের রোকনদেরকে কোরআন হাদিস বেশি বেশি অধ্যয়নের মাধ্যমে দ্বীন ইসলামের সর্বোচ্চ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনাদেরকে প্রতিবেশীর হক আদায় করতে হবে, আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করতে হবে, সমাজের যেকোনো অসংগতি দূর করার জন্য আপনাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াতের প্রতিটি রোকনকে একজন সমাজ কর্মী হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের সব তন্ত্র মন্ত্র দেখা শেষ, সুতরাং এবার বিজয় হবে ইসলামের আর সেই বিজয় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর মাধ্যমে হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি সকলকে আগামী দিনে ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে উক্ত সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান দারসুল কোরআনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে কোরআনের দাওয়াত প্রাঞ্জল ভাবে উপস্থাপন করে। উপস্থিত রোকনরা মনোযোগ সহকারে কোরআনের কথাগুলো শ্রবণ করেন।
পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে সংগীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে রাখেন মোহনা শিল্প গোষ্ঠী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামী বেড়া উপজেলার নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি, সকল কর্মপরিষদ সদস্য ও ইউনিয়ন আমীরগণ।