বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
আজ ১৭ নভেম্বর রোববার
বাংলার অবিসংবাদিত মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮ তম প্রয়াণ দিবস দিবস টি উপলক্ষে খুলনার বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ মহান এই ব্যক্তিকে অবিস্মরণীয়ভাবে স্মরণ করতে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সকালে মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিচারণে পুষ্প স্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনটির শুভ সূচনা হয়েছে। এ সময় প্রবীণ রাজনৈতিক সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গগণ মাওলানা ভাসানীর জীবন আলোকপাত করে বলেন মাওলানা ভাসানী ছিলেন একজন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বাংলাদেশের জন্য অকুতোভয়ী সৈনিক হিসেবে সর্বক্ষেত্রে তিনি একজন নিবেদিত মানুষ হিসেবে বলিষ্ঠ অগ্র পথে থেকে দেশ মুক্তির জন্য সর্বদা যুদ্ধ করেছেন। তাছাড়া দেশের নবীন রাজনৈতিক নেতাদের সুপথ দর্শন করিয়েছেন পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। এই মহান ব্যক্তিটি দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য অকুণ্ঠিতভাবে সর্বদা কাজ করেছেন ন্যাপ নামের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্যক্তিটি জীবদ্দশায় কোন অহংকার লোভ-লালসা কখনো প্রলম্বিত হন নাই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে নাই জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত দেশকে ভালোবেসে দেশের জয় গান গেয়েছেন তিনি দেশকে রক্ষা করার জন্য অগ্র সৈনিকের ভূমিকা পালন করে অবশেষে বার্ধক্য জীবনে ১৯৭৬ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। এ উপলক্ষে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের সন্তোষে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বাণীতে মাওলানা হামিদ খান ভাসানীর আদর্শ নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে প্রত্যাশা করে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মওলানা ভাসানী দেশ ও জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি সব সময় ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। দেশ ও জনগণের প্রতি তার গভীর ভালোবাসাই তাকে জননেতায় পরিণত করেছে।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে তিনি বলেন, মওলানা ভাসানীর অবস্থান ছিল শোষণের বিরুদ্ধে এবং শোষিতের পক্ষে। অধিকার আদায়ে তিনি এ দেশের মানুষকে সাহস জুগিয়েছেন তার নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে। সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর মওলানা ভাসানী জন্মগ্রহণ করেন। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৪৯ সালে গঠিত আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালের ২৪ জুন ভাসানীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের স্থায়ী বিচ্ছেদ ঘটে। যদিও আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগের প্রথম পদযাত্রা শুরু হয় মাওলানা হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে পরে আওয়ামী লীগ নামের দল প্রতিষ্ঠিত করে শেখ মুজিবুর রহমান অথচ সেই শেখ মুজিবুর রহমানই এই মহান ব্যক্তিকে জাতির পিতা হিসেবে ঘোষিত না করে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে দেশ ও জাতিকে বোকা বানিয়ে নিজেকে জাতির পিতার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। যা বাংলার ইতিহাসে এখনো প্রজ্বলিত।