মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৈতৃক জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে।
সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড এলাকার এই জমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। মো. হাসেম গংয়ের দাবি, তাদের বাপ-দাদার আমল থেকে ৬৫ শতাংশ আবাদি জমি তারা ভোগদখলে আছেন। তবে রেকর্ডে কম জমি নথিভুক্ত থাকায় বিষয়টি আদালতে গড়ায়। মামলা চলমান অবস্থায় এবং অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরেও প্রতিপক্ষ জমিতে ছাপরা ঘর তুলে দখল নেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন হাসেম গং।
জানাগেছে, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মকিমপুর মৌজার সি এস খতিয়ান ৫৭, এস এ খতিয়ান ৭৫০ ও আর এস খতিয়ান ৭৩০। সিএস দাগ ১২৫৫, এস এ দাগ ৩০২৩ এবং এস দাগ ৬২৮৮। আবাদি ৬৫ শতাংশ জমির মালিক মো. হাসেম গং (৫৫)। পিতা মৃত কাছের উদ্দিনের ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিকানা পান তারা। তবে আরএস রেকর্ডে ৩৫ শতাংশ জমি নথিভুক্ত থাকলেও ৬৫ শতাংশ ভুমিতে ভোগদখলে আছেন। বাকি ৩০ শতাংশ জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে তিনি মানিকগঞ্জ যুগ্ন জেলা জজ আদালতে রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেন। মামলা নম্বর দেওয়ানি ১৩৭/২৫, মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় ওই জমিতে দখলের চেষ্টা চালায় মুকিমপুর এলাকার মৃত তারু মিয়ার পাঁচ ছেলে চাঁন মিয়া, সাদেক, নালে, রাজা মিয়া ও বাকনু।
ভুক্তভোগী মো. হাসেম বলেন, “এটা আমাদের তিন পুরুষের পৈতৃক সম্পত্তি। আমরা এখানে আবাদ করি, গাছ লাগিয়েছি, সেচ মেশিন আছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা জোর করে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষ জমিতে ঘর উঠিয়ে দখল নিতে চাইছে। বাঁধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে আমাদের ধাওয়া দেয় । সরকারের কাছে আমরা আইনগত সহায়তা চাই।”
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভিন্ন কথা বলছেন প্রতিপক্ষ। চান মিয়া ও রাজা মিয়া জানান, বংশ পরম্পরায় জমিটির মালিক তারা ।তাদের তিন পুরুষের রেকর্ড,খারিজ,দলিলসহ সকল কাগজ পত্র রয়েছে । আদাল,থানা কিংবা যে কোন স্থানে কাগজপত্র নিয়ে বসতে রাজি তারা।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর ছাপড়া ঘর তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, প্রথম পক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়ে তারাই আগে আইন ভঙ্গ করে জমিতে ভূট্টা লাগিয়ে দখল নেয়ার চেষ্টা করলে তারাও ঘরটি তুলেছেন ।তবে কাউকে হামলা করার উদ্দেশে ধাওয়া করা হয়নি ।
মানিকগঞ্জ সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন ।পরে উভয় পক্ষকেই চলে যেতে বলা হয় এবং আদালতের নির্দেশনা মানার অনুরোধ করা হয়।
জমি দখল নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই সমস্যার সমাধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে—এমন প্রত্যাশাই সবার। অন্যথায় এ জমি বিরোধ বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।