মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.
মানিকগঞ্জের পাইকারি বাজারে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ।
কাঁচা মরিচের উৎপাদন কমে যাওয়ায় হঠাৎ দাম বেড়ে গেছে বলে জানান পাইকার ও মরিচ চাষিরা। তবে কোরবানী উপলক্ষে সিন্ডিকেটের কারণেই মরিচের দাম বেড়েছে বলে দাবি ক্রেতাদের। এমতাবস্থায় মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকেরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, শিবালয়, হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলায় মরিচের আবাদ সবচেয়ে বেশি। জেলায় এবার ৩ হাজার ২৯১ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো।আর আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫৪১ হেক্টর জমিতে; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫০ হেক্টর বেশি।
সরজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার মরিচ চাষিদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, অতিরিক্ত তাপে ও খরায় মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে ,ফলে ফলন কম হওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সোমবার ২০০-২৬০ টাকা দরে ১০০ কেজি মরিচ কিনেছি। এই মরিচ সাতক্ষীরা জেলায় পাঠাব। এত অল্প মরিচ কিনে সেখানে পাঠাতে যে খরচ, তাতে পোষায় না। দাম এভাবেই বেড়ে যাচ্ছে।’
মরিচ চাষি আবুল হোসেন ৫ বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেছে। তিনি বলেন, “দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত মাত্র ৬০ বা ৭০ কেজি মরিচ তুলছি । অতিরিক্ত তাপ আর খরার কারণেই এই অবস্থা।এবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় মরিচ গাছ থুবরে গেছে এবং ফলন হচ্ছে না। প্রথম দিকে অল্প ফলন হলেও গত ২ সপ্তাহ ধরে মরিচ ধরছে না। এখন তো আমাদেরও মরিচ কিনে খেতে হবে।”
হিজুলী বাজারের ক্রেতারা জানান তাদের মরিচ কিনতে হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা কেজি দরে।তিনি বলেন, ‘গতকাল বাসার সামনে একটি ভ্যানগাড়ি থেকে ১০০ টাকা দিয়ে ১ পোয়া মরিচ কিনেছি।’
হিজুলী কাচারী বাজারের মরিচ ব্যবসায়ী মোঃ রতন মিয়া বলেন, ‘উৎপাদন কমে গেলে দাম বেড়ে যায়, এটা স্বাভাবিক।আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই একটু বেশিই বিক্রি করতে হচ্ছে । কিন্তু কেজিপ্রতি দাম এত ব্যবধান হওয়াটা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিংসহ সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মোঃ এনায়েত উল্লাহ বলেন, “এবার অতিরিক্ত তাপে ও খরায় মরিচ গাছ থুবরে গেছে। অনেক গাছও মরে গেছে।ফলে উৎপাদন কমে গেছে। মরিচ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।গত বারের চেয়ে এবার মরিচের আবাদ বেশি হয়েছে। তবে আগামীতে মরিচের আবাদ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।”