জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ভূমি অফিসের সেবা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি এবং ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিজিবি সদস্য মোঃ সারজন মোল্যা নামের এক ভুক্তভোগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তিনি ও তার স্ত্রী মোসাঃ পারুল বেগম শরীফার নামে ২৭ শতক জমি ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। এই জমিটি ভূমি প্রজন্ম তহবিল (ভিপি) থেকে অবমুক্তির প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনও পেয়েছেন।
কিন্তু অভিযোগে বলা হয়েছে, লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) আব্দুস সালাম জমির কাজের জন্য তার কাছে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, তিনি সারজন মোল্যাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে ওই কর্মকর্তা জোরপূর্বক ঘুষ আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।এছাড়া নায়েব সালাম কিছুদিন আগে ১৮ বিসিএস (শিক্ষা ক্যাডার) এর কর্মকর্তা ডক্টর মোঃ শরিফুজ্জামানকে নানা ভাবে নাজাহেল করে তার জমির সঠিক প্রতিবেদন প্রদান করেন নাই এ বিষয় ওই কর্মকর্তা বলেন বৈধ কাজটি নায়েব সালাম করে দিলেন না। আমার মনে হয় উনি খুবই দাপুটে নায়েব কোন কিছু তোয়াক্কা করেন না। দেশটা কোথায় আছে !
এদিকে, সারজন মোল্যা,১৮ বিসিএস কর্মকর্তা (শিক্ষা) ডক্টর শরিফুজ্জামান ছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও অনেক ভুক্তভোগী একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। তারা জানান, নিয়মিতভাবে ভূমি অফিসে জমি সংক্রান্ত কাজ করাতে গেলে,ওই নায়েব সালাম অর্থের দাবি করেন। টাকা না দিলে তাদের কাজ ফেলে রাখা হয় কিংবা নানা জটিলতার মুখে পড়তে হয়। এক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা নিয়ম মেনে জমির কাজ করাতে গেলে, এমন হয়রানির শিকার হতে হয়। টাকা না দিলে কোনো কাজই ঠিকভাবে হয় না।”
স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, “এই দুর্নীতির কারণে আমরা আমাদের ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারি কর্মকর্তাদের এমন আচরণে আমরা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট।” তারা দুর্নীতির বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এঘটনায় লোহাগড়া ইউনিয়ন উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা ( নায়েব) আব্দুস সালাম কে মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যাই নাই।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিঠুন মৈত্র জানান, “অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমি বিষয়টি নিয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করছি। ইতি মধ্যে তদন্ত চলমান রয়েছে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়রা আশাবাদী, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে জনসাধারণের ন্যায্য সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবেন।