জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পার মল্লিকপুর গ্রাম আবারও অশান্ত হয়ে পড়েছে। বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে একটি পক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষকে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গত বুধবার বিকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে লোহাগড়া থানার এসআই মাসুদের ওপর হামলার ঘটনায় রাতে থানায় মামলা হলেও পুলিশ তথ্য দিতে গড়িমসি করছে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের অভিযোগ।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে , নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পার-মল্লিকপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে ফের অশান্ত হয়ে পড়েছে। বিবাদমান দুটি পক্ষ দীর্ঘ বিরতির পর ফের দ্বন্ধ-সংঘাত এবং সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে। বিবাদমান দুটি পক্ষ হলো, ওই গ্রামের কান্চন ঠাকু, মোস্ত ঠাকুর ও আলামীন ঠাকুর সমর্থিত ‘ঠাকুর গ্রুপ’ এবং জলিল শেখ, আব্দুল শেখ সমর্থিত গ্রুপ। বিবাদমান এ দুই গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে ২০১৬ সালের ১৬ আগষ্ট সকালে প্রতিপক্ষের হামলায় নুর ইসলাম মৃধা ও ইকবাল মৃধা নামে দুজন গ্রামবাসী খুন হয়। চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের ঘটনার মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
জোড়া খুনের মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে ফের অশান্ত হয়ে পড়েছে পার- মল্লিকপুর গ্রাম। দীর্ঘদিনের জিইয়ে থাকা দ্বন্দ্ব-সংঘাত সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঠাকুর গ্রুপ সমর্থিত মোশাররফ কাজীর ছেলে ও লোহাগড়া হাট-বাজারের ইজারাদার মিজু কাজীকে (৩৭) ইজিবাইক থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষ মৃধা গ্রুপ সমর্থিত লোকজন। এ ঘটনায় লোহাগড়া থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
এ দিকে বুধবার বিকাল ৪ টার দিকে লোহাগড়া থানার এসআই মাসুদ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মৃধা গ্রুপ সমর্থিত দুর্বৃত্তরা তাকে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় রাতে একটি মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এ সংক্রান্ত কোন তথ্য দিচ্ছে না। যে কারণে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে পুলিশ তথ্য দেয় নাই। হামলা এবং মামলার বিষয়টি পুলিশেরই পরিস্কার করে বলা উচিত বলে মনে করেন গণমাধ্যমে কর্মীরা।
নাম প্রকাশ করা হবে না-এই শর্তে পারমল্লিকপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা এবং মামলার ঘটনায় পুরো গ্রাম এখন প্রায় পুরুষশূন্য। গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছে গ্রামবাসী।
এই ঘটনা নিয়ে ১৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে সাংবাদিক সরদার রইচ উদ্দিন টিপু বলেন দ্রুত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয় হস্তক্ষেপ করলে হয়তো ওই এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে। নইলে বড় ধরনের সংঘাত যে কোন সময় ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ‘ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য দিতে গড়িমসি করছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।