আব্দুল গাফফার
শেরপুর(বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম অনিকা সরকার বিন্দু (১৮)। বুধবার (০৯আগস্ট) দুপুরের দিকে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের বৃন্দাবনপাড়াস্থ বসতবাড়ির নিজ শয়নকক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত অনিকা সরকার ওই গ্রামের অতুল চন্দ্র সরকারের মেয়ে এবং শহরের শেরউড ইন্টারন্যাশনাল (প্রা:) স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতের খাবার খেয়ে লেখাপড়া ও ঘুমানোর জন্য নিজকক্ষে যায়। কিন্তু পরদিন বুধবার সকালে পরিবারের সদস্য বাবা-মা ঘুম থেকে জেগে উঠে নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অনিকা সরকার ঘুম থেকে জেগে না ওঠায় তার মায়ের মনে সন্দেহ হয়। পাশাপাশি শয়নকক্ষের দরজার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তার কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। পরে ঘরের অন্য দরজা খুলে অনিকাকে সেলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এসময় প্রতিবেশীরা এসে তার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় বলে জানান তারা। সেইসঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের কয়েকটি ডায়েরী ও চিরকুট লেখা কাগজ উদ্ধার করা হয়। চিরকুট সম্পর্কে জানতে চাইলে শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের হাতের লেখা চিরকুটে লেখা আছে-‘বাবা-মা তোমরা ভালো থেকো, আর কোনদিন বিরক্ত করব না।’ এছাড়াও আরো কিছু লেখা আছে যা তদন্তের স্বার্থে বলা সম্ভব হচ্ছে না। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে পরবর্তীতে সে বিষয়ে জানানো হবে বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজীব শাহরিনসহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এসময় জানতে চাইলে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজমগীর হোসেন বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেলেই কেবল মৃত্যুর আসল কারণ জানা ও বলা সম্ভব হবে। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু দায়ের করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি ডায়েরী ও চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই মৃত্যুর রহস্য উদঘটন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।