মশিউর রহমান সুমন
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টার অভিযোগ আনেন এক ছাত্রী। এবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছেন আরও ৩০ ছাত্রী।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকের অন্তরঙ্গ কথোপকথনের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়।
স্ক্রিনশটগুলোতে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে এসেছে। এতে অঙ্ক বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যক্তিগত চেম্বারে ডাকা, মেসেঞ্জার-হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রামে মাঝরাতে ছাত্রীদের চা পানের নিমন্ত্রণ করা, শাড়ি পরে দেখা করতে বলা, ছবি ও ভিডিও চাওয়া, অশ্লীল ভিডিও লিংক শেয়ার করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘২০১৯ সালে ভর্তির পর থেকেই সাজন সাহা স্যার আমাকে নানান ধরনের মেসেজ দিতেন। রাত বিরাতে চা পানের আমন্ত্রণ, বাসায় কেউ না থাকলে আসতে বলা, একাকি অফিসে ডাকা এবং পাশাপাশি অশ্লীল ছবি ও ভিডিও লিঙ্ক দিয়ে বিরক্ত করতেন। তার কোর্সে ভালো নম্বর পাইয়ে দেওয়ার অফারও দিয়েছেন বহুবার। তার কথায় রাজি না হলে আমার ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট আটকে রাখাসহ নানাভাবে হয়রানি করেন শিক্ষক সাজন সাহা।’
সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ৩১ ছাত্রীর কুপ্রস্তাবের অভিযোগ
তিনি আরও বলেন, ‘সাজন সাহা স্যারের চা পানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আমার সব বিপদ নেমে আসে। ক্লাসে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় বসতে জরিমানা গুনতে হয়েছে আমাকে। পরীক্ষার নম্বর কমে গেছে, থিসিস পেপার নিয়ে বারবার হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। এ ছাড়া এমন আর অনেক ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হয় আমাকে। সবশেষ উপায় না পেয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি।’
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি ২০১৮-১৯ ব্যাচে ভর্তি হই। এরপর ২০১৯ সাল থেকে শিক্ষক সাজন সাহা আমার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছেন। এখন অপারগ হয়ে আমি বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছি। আমার দাবি একটাই, ওই শিক্ষকের বহিষ্কার।’
ওই ছাত্রী মুখ খোলার পর আরও অন্তত ৩০ জন ছাত্রী একই অভিযোগ করেছে। তারা জানান, ফেসবুকে তাদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিয়েছিলেন সাজন সাহা। শিক্ষক বলে তার রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেন তারা। এরপরেই তাদেরকে জ্বালানো শুরু করেন সাজন সাহা। তাদেরকে ব্যক্তিগত চেম্বারে ডাকা, মেসেঞ্জার-হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রামে মাঝরাতে ছাত্রীদের চা পানের নিমন্ত্রণ করা, শাড়ি পরে দেখা করতে বলা, ছবি ও ভিডিও পাঠাতে বলেন ওই শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের জ্বালায় অতিষ্ঠ তারা। তার বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
তারা আরও জানান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র সাজন সাহাকে পরোক্ষভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাকে জানালে তিনি বিষয়টি সমাধানে নানা শর্ত জুড়ে দিতেন