বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে আটককৃত আওয়ামী সন্ত্রাসদের জবানবন্দি থেকে বেরিয়ে আসছে তালুকদার আব্দুল খালেকের লুকিয়ে থাকা থলের বিড়াল। খুলনার সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের পৃষ্ঠপোষকতায় খুলনা মহানগর তথা আশেপাশের জেলার বেশ কিছু আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নগর ভবনে আনাগোনার মাধ্যমে চাকরি নিয়োগ বাণিজ্য আধিপত্য বিস্তার ঠিকাদারী ব্যবসার অন্তরালে অবৈধ অর্থের সাম্রাজ্য ও শত শত কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স গড়ে তোলার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
সত্যতা মিলেছে ফ্যাসিবাদী সরকার হাসিনার একান্ত আস্থাভাজন খুলনা দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম নেতা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা নগর ভবনের একনেকের বাজেট বরাদ্দকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা সঠিক কাজে ব্যবহার না করে নগর ভবনের কতিপয় কিছু অসৎ ব্যক্তিদের ভয় ভীতি অর্থের লোভ দেখিয়ে জনগণ ও রাষ্ট্রের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করার এবং তার সাথে আরো অভিযোগ রয়েছে তারই স্ত্রী সাবেক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুর নাহারের বিরুদ্ধে স্বামী স্ত্রী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমানতালে খুলনা শহর থেকে দক্ষিণ বাংলার সুন্দরবন অঞ্চল পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করে অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছে এবং দক্ষিণ বাংলার অন্যতম মোংলা পোর্ট নিজের আয়ত্তে রেখে তদারকি করেছে হাতিয়ে নিয়েছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কয়েক শত কোটি টাকা। একই সাথে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছে অত্র এলাকা জুড়ে কেউ দুই কাঠা জমি বিক্রি করতে গেলেও তাকে সুবিধা দিতে হয়েছে। পাশাপাশি দখল করেছে অসংখ্য নিরীহ মানুষদের আবাদী জমি ও বসতভিটা তার মধ্যে অন্যতম তালুকদার আব্দুল খালেকের খুলনা শহরের গগন বাবু রোডের বসতবাড়িটির প্রকৃত মালিক জনৈক এক হিন্দু ব্যক্তিকে জীবনের হুমকি দেখিয়ে রাতারাতি বাংলাদেশ থেকে ভারত পাঠিয়ে দিয়ে প্রায় ১০ কাঠা জমি যার মূল্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা অথচ তাকে রিক্ত হস্তে জীবননাশের হুমকি দিয়ে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে।
উল্লেখ্য গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে যায় তালুকদার আব্দুল খালেক।
বিষয়টি জানতে পেরে জমির মালিক ভারত থেকে ফিরে এসে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও খুলনা শহরের বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবগত করে সঠিক সমাধান না পেয়ে অবশেষে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনাকারী যৌথ বাহিনীর নিকট অভিযোগ করেছে অভিযোগের বিষয়টি যৌথ বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের অফিসারগণ আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ভুক্তভোগীকে। পাশাপাশি তালুকদার আব্দুল খালেকের নির্মমতা অত্যাচারের লোমহর্ষক কাহিনীর বিবরণ দিয়েছে ভুক্তভোগী। তিনি জীবন বাঁচানোর তাগিতে রাতারাতি দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়ে গিয়েও শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি তালুকদার আব্দুল খালেকের কথিত নেতাদের উৎপাতে, কারণ তারা ভারতে গিয়েও আমাকে খুঁজে বের করে নানাভাবে ভয় ভীতি দেখিয়েছে। তার আগে তালুকদার আমাকে ঘরে বন্দী করে জোরপূর্বক দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বর্ডার পর্যন্ত দলীয় লোকজন দিয়ে পৌঁছে বেনাপোল বর্ডার পার করে দিয়ে চিরজীবনেরতরে বাংলাদেশে না ফেরার হুমকিও দিয়েছে। তাছাড়া অপারেশন ডেভিল হান্ট খুলনা নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর বাড়ি থেকে মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও দিগরাজের কথিত ভয়ংকর ত্রাস নাসির হাওলাদারকে আটক করার পর তার কাছ থেকেও বেরিয়ে এসেছে তালুকদার আব্দুল খালেক ও তার স্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার কুকর্ম জমি দখল অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন এবং এককথায় ভয়ানক রাজ্যের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী স্বস্ত্রীক খালেক। আটকের পর নাসির হাওলাদার তালুকদার খালেকের বিভিন্ন অপকর্মের কথা তুলে ধরে বলেছেন খালেক রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে দেখেছি সে একজন নারীলোভি অর্থ লোভী ভূমি দস্যু এবং নিরব চাঁদাবাজ, তালুকদারের কথা ছিল মাস শেষে তার চাহিদা মতন অর্থ যোগান দিতে না পারলে সেই সকল নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার ও ঠিকাদারী লাইসেন্স বাতিলের হুমকিতে রাখতো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকদের পাশাপাশি তার আস্তাভাজন কর্মীদের নির্দেশ দিত অল্প বয়সী সুন্দরী নারীদের এনে দিয়ে তার রাতের সঙ্গিনী হিসেবে যৌনচরিতার্থ সিদ্ধি করার জন্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগরীর বেশ কয়েকজন সুন্দরী নারী অভিযোগের সত্যতার বিবরণ দিয়েছে তার মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন বদমাইশ খালেকের কারণে আমার সংসার ভেঙেছে আমার স্বামী আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে আমি ছাড়াও আমার মতন নগরীতে আরো দু-একজন নারীর জীবনের পরিণতি আমার মতনই হয়েছে। ভয়ানক চরিত্রহীন নারী লোভী মিথ্যাবাদী বুড়ো লম্পট তালুকদারের অমানুষিকতা একাত্তরের সীমারকেও হার মানিয়েছে এবং তার জীবনের বৈশিষ্ট্যগত দিক তুলে ধরতে গেলে বলা যেতে পারে সে একজন অসভ্য অকথ্য ভাষার মানুষ সে গালিগালাজ ছাড়া কখনো কথা বলতে পারতো না ক্ষমতাকে সে এতটাই বেশি অপব্যবহার করত একজন রিক্সাওয়ালা থেকে কোটিপতি পর্যন্ত যে কোন শ্রেণীর মানুষদের সাথে অপমান সুলভ আচরণ করতো এবং সমাজের অসহায় মানুষদের সরকারি ত্রাণ তহবিলের অর্থে শীত বস্ত্র খাদ্য সামগ্রী ও যেকোনো কিছু বিতরণ কালেও তাদের সাথে অসদাচরণ করত তার আচরণে অতিষ্ঠ হলেও কারোর প্রতিবাদ করার ক্ষমতা ছিল না তার বিরুদ্ধে। তার সকল ক্ষমতার উৎস ছিল খুলনার রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার অন্যতম কেন্দ্রস্থল শেখ বাড়ি, কারণ শেখ পরিবারের সকল ভাইদের মাদক অর্থ ও নারী সরবরাহের অন্যতম যোগান দাতা ছিল তালুকদার আব্দুল খালেক।
