নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:
খাল খননে অনিয়ম-দুর্নীতি, ভুয়া মাষ্টাররোল ও কাজ না করেই বিল উঠানো, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে দরপত্র ছাড়াই নিম্নমানের কাজ বাস্তবায়ন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে না জানিয়েই একাধিক কাজ বাতিল এবং যোগসাজশে দরপত্রে অনিয়মের প্রহসনসহ- এমন ডজন খানেক অভিযোগ আসে সিরাজগঞ্জের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে কয়েকটি অভিযোগ তদন্তেও প্রমাণ মেলে। এ অভিযোগে গত তিন মাস আগে বদলি করা হলেও উপর মহলকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে ছিলেন । তিনি এ সময় কাউকে কোনো পরোয়া না করে ‘ডোন্ট কেয়ার’ নীতিতে চলছেন । এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয়, জাতীয় ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর মন্ত্রণালয় ও এলজিইডি থেকে তদন্ত করে দুর্নীতির প্রমাণ পায় ।
গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলী আক্তারের স্বাক্ষরিত ১১৯৫১ নং স্মারকে সফিকুল ইসলামকে পাবনা আঞ্চলিক অফিসে এবং ১১৯৫২ নং স্মারকে মনিরুল ইসলামকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়। এর ঠিক চার কার্যদিবস পর ২১ নভেম্বর সেই আদেশ স্থগিত করা হয়।
অবশেষে ২য় দফায় মঙ্গলবার ( ১৯ মার্চ) সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অফিসসূত্রে জানা যায়, প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলী আক্তারের স্বাক্ষরিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৪৬.০২.০০০০.০০১.৯৯.১৩০.১৮- ১৮৪৩১৫ নং স্মারকে সফিকুল ইসলামকে পাবনা আঞ্চলিক অফিসে বদলি এবং ৪৬.০২.০০০০.০০১.৯৯.১৩০.১৮- ১৮৪৩১৬ নং স্মারকে পাবনা আঞ্চলিক অফিস থেকে মনিরুল ইসলামকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জের সদ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, প্রধান প্রকৌশলী অফিস থেকে আজ পূর্বের আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। নির্বাচনের কারণে স্থগিত হওয়া আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সফিকুল ইসলামের অদক্ষতায় ২৭ কোটি টাকা উন্নয়ন বঞ্চিত হয় সিরাজগঞ্জবাসী। এছাড়া খাল খননে মৃত ব্যক্তির নামে স্বাক্ষর ও ভুয়া মাষ্টার রোল বানিয়ে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন এবং জেলার একাধিক রাস্তায় নিম্ন মানের কাজ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন ছাড়াই কোটি কোটি টাকার বিল প্রদানে অনিয়ম করে নির্বাহী প্রকৌশলী।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর খাল খননে মৃত ব্যক্তির নামে টাকা উত্তোলনে নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশ পায় তদন্ত কমিটি এছাড়া গত ১৭ জুলাই দুদক আঞ্চলিক পাবনা অফিসও সরজমিনে তদন্তে অনিয়ম পায়। যা দুদকের মামলা অনুমোদন জন্য প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্তে ২৫ সেপ্টেম্বর তাড়াশ বারুহাস ও তাড়াশ কুন্দাইল রাস্তায় ১২ কোটি টাকার কাজের তদন্তে অনিয়মে নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে প্রমাণ পায় তদন্ত কর্মকর্তারা।