বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
আগমনের আনন্দে ভাসিয়ে হৃদয় শরতের শিউলির নাচে দুর্ভা ঘাসে মহালয়ার মধ্য দিয়ে মা এসেছিল কৈলাস ছেড়ে মর্ত্যলোকে বাপের বাড়িতে। তাই সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে প্রতিদিন পূজা অর্চনা প্রতিমা দর্শন এর মধ্য দিয়ে আনন্দে মেতে ছিল মা দেবী দুর্গার সকল ভক্তগণ, তবুও আজ হৃদয়ের বিষাদে অশ্রুসিক্ত নয়ন জলে সকালে দশমী পূজা ও দর্পণ বিসর্জন পরে সিঁদুর খেলার পর্ব শেষে জানাতে হচ্ছে মহামায়াকে বিদায় বারতা। আজ সকালে পঞ্জিকার সময় অনুযায়ী যথারীতি পূজা অর্চনা শেষে দর্পণ বিসর্জন পুষ্পাঞ্জলি সবকিছু মিলে প্রতিবছরের ন্যায় পাঁচ দিন জগত কল্যাণে প্রতিটি মন্দিরে মন্দিরে আরতী কীর্তন আলোকসজ্জা ধূপ ধুনোর ঘ্রাণে এবং দর্শনার্থীদের সমাগমে এক স্বর্গীয় অনুভূতি ছিল প্রতিটি মন্দিরে । একই সাথে মন্দির প্রাঙ্গণে একে অপরে মায়ের আগমনী বার্তার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে আলোচনায় সময় পার করতে দেখা গেছ ফলে সকল ভক্তদের হৃদয়ে আনন্দের বৈভব বৈতে থাকে এবং মা ঊমা দশভূজা দেবী জগতব্যাপী শান্তি প্রদান করার জন্য এবং ভক্তদের মনে অনাবিল আনন্দ প্রদানে মর্তে অবস্থান করেন।
তবে আজ দশমীর দিনে মায়ের বিদায়ের মধ্য দিয়ে টানা পাঁচ দিনের দুর্গাপুজোর সমাপ্তি হোলো।
তাই দশমী মানেই ভক্তদের মন খারাপ হৃদয়ে বিষাদের আবারণ। এবার মাকে বিদায় দেওয়ার পালা।
ঊমা তার বাপের বাড়ি ছেড়ে পুনরায় গমন করবেন দেবাদিদেব মহাদেবের কৈলাসে।
এই দিন সকালে দর্পণ বিসর্জন সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের পূর্বে শুরু হয় সিঁদুর খেলা ।
আদি পৌরাণিক কাহিনীর ব্যাখ্যাতে উল্লেখ আছে যে মহিষাসুরের সাথে মা দুর্গার ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ হওয়ার পর দশম দিনে বিজয় লাভ করেন দেবী দুর্গা।
আর তখন থেকেই নারী শক্তির এই জয়লাভকে বিজয়া বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
দেবী দুর্গার এই বিজয়ে নারী জাতির ধবনীতে আনন্দের উদ্বেলিত হয়ে মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়।
একে একে শধবা নারী গণ মাকে বরণ করার পর তার সিথিতে ও পায়ে সিঁদুর ছুঁইয়ে দেন। তারপর নিজেদের মধ্য মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়।
মন খারাপের মাঝেও হাসিমুখে সিঁদুর খেলা ও মিষ্টি মুখে বিদায় জানানো হয় দশভূজাকে শুরু হয় অপেক্ষার পালা আরো একটি বছরের।
বিজয় দশমীর সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পরে সন্ধ্যায় খুলনা জেলখানা ঘাট থেকে নগরীর প্রতিটি মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন করা হয়েছে।
এ সময় বিসর্জন পর্বে উপস্থিত থাকবেন খুলনা জেলা ও মহানগরের পূজা উদযাপন কমিটির কর্মকর্তা গন এবং প্রশাসন মহলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপত্তার তদারকিতে থাকবে পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাগণ সাথে থাকবেন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গগরা।
তাছাড়া বিসর্জন পর্ব বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া সরাসরি সম্প্রচার করবে এবং প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।
তবে এ বছর খুলনা সহ আশপাশ এলাকা জুড়ে প্রতিটি পূজা মন্ডপে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সম্প্রীতির বন্ধনে উদযাপিত হয়েছে শারদীয় দূর্গা উৎসব।
সপ্তাহব্যাপী শারদীয় উৎসব ঘিরে প্রশাসনের নজরদারি ছিল কঠোর অবস্থানে। সর্বশেষ আজ সকালে খুলনা পূজা উদযাপন পরিষদর থেকে জানিয়েছে এবছর একই দিনে অষ্টমী এবং নবমী পূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে পাঁচ দিনের জায়গায় চার দিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয়া দুর্গা উৎসব সেই লক্ষ্যে নগরীর যে সকল জায়গায় রাস্তা জুড়ে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে সে সকল মন্দিরের প্রতিমা আজ সন্ধ্যার পর থেকে এক এক করে বিসর্জন অনুষ্ঠিত হবে। এবং বারোয়ারি প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের প্রতিমা আগামীকাল যথারীতি সময়ে বিসর্জন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন খুলনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।