বিপ্লব সাহা,খুলনা ব্যুরো :
সমগ্র শহর জুড়ে কথিত কিশোর গ্যাং উৎপাতের বিষফোঁড়ার রূপ ধারণ করে প্রতিনিয়ত অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে সামাজিক আচরণ পদদলিত করে অগ্নিমূর্তি রূপে বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করার খাতার পৃষ্ঠা উল্টিয়ে অসামাজিক কাজে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যত সব অপকর্মের সাথে জড়িয়ে সমাজের কথিত বড় ভাইদের ছত্রছায়ায় উঠতি বয়সি স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্ররা মাথা চড়া দিয়ে উঠে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে না।
এবং এদের আচরণ এক পর্যায়ে উগ্রপন্থী আগ্রাসন সৃষ্টি করে সুশীল সমাজের কাঁধে জেঁকে বসেছে।
খুলনা শহর জুড়ে উশৃংখল কিশোর মাস্তানদের উৎপাতে অতিষ্ঠ সমগ্র নগরবাসী। এদের সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের ভয়ে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অনেক জঘন্য অপকর্মকেও প্রশ্রয় দিয়ে সমাজের সম্মানী ব্যক্তিগণ নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে দেখেও না দেখার ভান করে মাথা নিচুকরে চলে যেতে হচ্ছে তাদের। এক্ষেত্রে অধিকাংশ এলাকার গুণীজন অভিযোগ করে বলেন কথিত কিশোর গ্যাংদের উৎপাতে এলাকার চায়ের দোকান গুলোর সামনে দলবদ্ধভাবে ভিড় জমিয়ে অশালীন ভাষা এবং ময়মুরুব্বিদের সামনে ওপেন ধূমপান করা কিশোর মাস্তানদের ফ্যাশানের রূপ নিয়েছে।
এরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রত্যেক মহল্লায় আড্ডা জমায় কিশোর গ্যাং এর গ্যাং বাহিনীরা এই কিশোর গ্যাং বাহিনীরা নেশা সেবন থেকে শুরু করে নেশাদ্রব্য বিক্রি করার পেছনেও এই চক্রের হরহামেশ অতপ্রত ভাবে জড়িত থাকার কথা শহরের সর্বমহল অবগত থাকলেও তার কোন প্রতিকার হওয়ার কোন উপায়ান্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তাছাড়া কিশোর মাস্তানদের শহর জুড়ে মোটরসাইকেল বেপরোয়াভাবে চালানো গতিবিধি অস্বাভাবিক ভয়ংকর। মোটরসাইকেলের বিকট শব্দে শব্দ দূষণ করা টাও এদের ফ্যাশনের একটা প্রধান অংশ।
অপরদিকে শহরের কোনো না কোনো এলাকায় সামান্য তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত মারামারির ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তবে এদের প্রশাসনিক ভাবে ধরপাকড় করে ও কোন স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। তার মুখ্য কারণ পুলিশ এর অভিযানে এদের আটক করা হলেও এদের থানা পর্যন্ত নিয়ে পৌঁছানোর আগেভাগে কোন অজ্ঞাত মহলের ফোনের দাপটে প্রশাসন কথিত কিশোর মাস্তানদের নিরুপায় হয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে ।
এক্ষেত্রে প্রশাসন মহলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাগরিক ভাবনাকে বলেন কোথা থেকে কে বা কারা ফোন করে এই দুষ্টু চক্রদের আমাদের প্রশাসনের হাত থেকে মুক্ত করছে সব আমাদের কাছে অবগত। তিনি আরো বলেন এ সকল বিষয়ে আমরা প্রকাশ করলে অনেক থলের বিড়ালের প্রকৃত চেহারার জনসম্মুখে উন্মোচন হয়ে যাবে তবে কিশোর মাস্তান বাহিনী একদিনে তৈরি হয়নি।
এ সকল কিশোরবয়সী ছেলেদের বেসামাল হওয়ার পেছনে শুধু যে কথিত আন্ডারগ্রাউন্ডের বড় ভাই দায়ী ভাবাটা একদম ভুল হবে বলে মন্তব্য করেন চানমারি এলাকার স্কুল শিক্ষক মোঃ আরাফাত হোসেন।
তিনি বলেন আমরা যারা সন্তানের বাবা-মা আমাদের অভিভাবক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নজরদারি করে সন্তানদের গতিবিধির লক্ষ্য করে স্বাভাবিক পারিবারিক শাসনের আওতার মধ্য সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে কিছুটা হলেও এই অবক্ষয় সামাল দেওয়া সম্ভব।
অথচ আমরা আমাদের স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলেটি অধিক রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে কি কারণে কোন শ্রেণির ছেলেরা এদের বন্ধু।
সন্তানদের প্রতি স্নেহবশত হয়ে একেবারে উদাস এবং প্রেক্ষাপটের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের ভবিষ্যতের কথা না ভেবে দিনের পর দিন নানান চাহিদা পূরণ করে বাহবার সাথে অন্ধকার জীবনে ঠেলে দিচ্ছি।
শহরব্যাপী কিশোর মাস্তানদের অস্বাভাবিক আচরণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের খুলনা বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন নাগরিক ভাবনা কে কথিত কিশোর মস্তানদের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন একসময় এলাকাভিত্তিক উল্লেখযোগ্য বংশীয় মাস্তান ছিল আর তাদের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে এলাকা থেকে আরেক এলাকায় গিয়ে বোমাবাজি মারামারি হতো। একপর্যায়ে আবার শহরের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা হয়ে যেত। তবে বর্তমান কিশোর মাস্তানদের দৌরাত্ম্য এত বেশি প্রসার যার দরুন এরা সমাজের সকল ধরনের জঘন্যতম কাজের সাথে সম্পৃক্ত। ইভটিজিং চাঁদাবাজি গ্রুপিং ছিনতাই জায়গা দখল করা সব কাজে কিশোর মাস্তানদের দ্বারা সম্ভব কিশোর গ্যাংদের প্রতিটা সদস্য সর্বক্ষণ নেশা সেবন করে মস্তিষ্ক বিকৃত করে রাখে।
ফলে এদের চিন্তা ধারাটা সম্পূর্ণ নেগেটিভিটির দিকে সঞ্চালিত হয়।
এরা একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত আধুনিক মোবাইল সেট মোটর বাইক মডেল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে।
আর এই সকল প্রয়োজন মেটানোর অর্থ যোগান এর উৎস মাদক বিক্রি চক্রের সাথে জড়িত এবং বিভিন্ন পন্থায় অসহায় মানুষদের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দায় ভুয়া কাগজ তৈরি করে ভূমিদস্যুদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে ভূমি জালিয়াতির মাধ্যমে মধ্যবিত্ত মানুষদের সর্বশ্রান্ত করছে। এছাড়া অসামাজিক বহু অপরাধের জন্য এরা দায়ী বর্তমানে শত শত কিশোর মাস্তান দলের নাম ও অবস্থান গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও থেমে নাই অপরাধ গঠিত অপকর্ম থেকে।
কথিত কিশোর মাস্তান রা চুরি ডাকাতি খুন ধর্ষণ করে উন্নতি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ করে ব্যাংক জালিয়াতি তথা বিকৃতি চরিত্র হনন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচুরির কাজেও তারা পটু। মোবাইল পর্নোগ্রাফির প্রধান তারা তাই সারা শহর জুড়ে এখন তারা বিশেষ আতঙ্কের বিষফোঁড়া।
এদের তৎপরতা দিন দিন এত পরিমানে প্রভাব বিস্তার করছে আর এদের মাস্তানি দৌরাত্ম্য কোথায় গিয়ে ঠেকবে সে ব্যাপারে মন্তব্য করাটাও দুষ্কর। আজকের উঠতি বয়সে কিশোর মাস্তানদের নীল নকশা তৈরি করে অপরাধ জগতে প্রভাবিত করে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে কিশোর গ্যাং লিডার মহল থাকছে আন্ডারগ্রাউন্ডে। সেই ক্ষেত্রে লিডারদের নীল নকসহ প্রভাবিত হয়ে গর্জে উঠে ভয়ংকর হুকুম পালন করতে থাকে। তারা সকল সাহস অতিক্রম করে কোন কাজের মধ্যে অন্যায় আর ন্যায় কোন হেদায়েত জ্ঞান তাদের থাকছে না তথাকথিত অপকর্মের অপরাধ জগতের সমাজের ভয়ংকর ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তাদের কোন হুশ জ্ঞান না থাকায় তারাই সমাজের বিষ পয়জন।