আনারুল ইসলাম,কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহর বিরুদ্ধে নম্বর টেম্পারিং এবং পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পায়তারার অভিযোগ উঠেছে।
গত ২১ নভেম্বর ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের নিপা পাল, সুমাইয়া নাসরিন ঐশী এবং মো: আশিকুর রহমান শাকিল নামের তিন শিক্ষার্থী ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) চেয়ারম্যান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা যায়, ২০২০ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণাদিসহ একই বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী প্রদিতি রাউত প্রমার প্রতি পক্ষপাতিত্ব, নম্বর টেম্পারিংয়ের জের ধরে পরীক্ষা কমিটি থেকে অপসরণের দাবিতে আন্দোলনে নামে ঐ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ড. মেহেদীকে ঐ শিক্ষাবর্ষের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা কমিটি থেকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরবর্তীতে বিভাগের একজন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে যাওয়ায় ড. মেহেদী পূর্বের পদত্যাগকৃত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের যোগসাজশে নম্বার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৫০ প্রাপ্ত প্রদিতি রাউত প্রমাকে স্নাতককোত্তরে সিজিপিএ ৩.৮৫ প্রদান করেন এবং অন্যদের অনেকের স্নাতকে ফলাফল ৩.৫০ এর উপরে থাকলেও সবাইকে সিজিপিএ ৩.৫০ এর নিচে প্রদান করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ২০২২ সালের ১৯ জুলাই সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চেয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের কাছে আবেদন দিলেও কোনো প্রতিকার পাননি।
অপরদিকে বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ তুলেছেন, স্নাতকের শুরু থেকেই ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী প্রদিতি রাউত প্রমাকে ড. মেহেদী উল্লাহর কোর্সে বিশেষ নজড়ে দেখে সর্বোচ্চ নম্বর প্রদান করতেন। আরও অভিযোগ রয়েছে আসন্ন শিক্ষক নিয়োগেও প্রদিতি রাউত প্রমাকে শিক্ষক বানাতে বিভিন্ন মহলে তৎপরতা চালাচ্ছে ড. মেহেদী উল্লাহ। এছাড়া নিজের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও রয়েছে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ। নিয়োগের শর্তে স্নাতকের সর্বনিম্ন সিজিপিএ ৩.৫০ চাইলেও শর্তভঙ্গ করে মাত্র ৩.৩১ সিজিপিএ নিয়ে শিক্ষক হয়েছেন তিনি। তাই ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের দাবি জানানো হয় লিখিত অভিযোগে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান শাকিল জানান, নম্বর টেম্পারিং এবং প্রদিতি রাউত প্রমাকে মেহেদী স্যার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চান এবিষয়টি বিভাগের সবাই জানে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনেকবার গিয়েছি কিন্তু প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমরা চাইনা বিতর্কিত কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হোক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়।
এ ব্যাপারে ড. মেহেদী উল্লাহর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।