রাসেল কবির// বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার বিভিন্ন স্থানে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন’-এর কোনও ধারাই না মেনে একাধিক অবৈধ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। জনবহুল এলাকা, কৃষিজমি ও পরিবেশগত সংবেদনশীলতার তোয়াক্কা না করে বেশিরভাগ ভাটা ব্যবসায়ীই আইনের লঙ্ঘন করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা স্থানীয় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে।
‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৯’ অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা, সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, এবং কৃষিজমির কাছাকাছি বা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কিন্তু কাজিরহাট এলাকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক ভাটা জনবহুল আবাসিক এলাকার একদম কাছেই স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ইট তৈরির প্রধান উপকরণ হিসেবে কৃষি জমির উর্বর টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এলাকার খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
বেশ কিছু ভাটায় পরিবেশবান্ধব জিগজ্যাগ চুল্লীর পরিবর্তে এখনও নিষিদ্ধ ঘোষিত ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলের অনেক ইটভাটারই পরিবেশ ছাড়পত্র বা যথাযথ লাইসেন্স নেই।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরিচালিত এই ইটভাটাগুলো থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া ও ক্ষতিকারক ছাই পার্শ্ববর্তী এলাকার বায়ু দূষণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় মানুষজন শ্বাসতন্ত্রের রোগ, বিশেষত শিশু ও বয়স্করা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। এছাড়া, ফসলি জমির ক্ষতি হওয়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশকর্মীরা অবিলম্বে এই অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কাজিরহাটের পরিবেশ আরও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

