মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে ২৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ৪ জন খামারীর মোট ৯টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।চুরি হওয়ার পর থেকে ওই গ্রামের খামারীদের মাঝে চোর আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরোজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, কমলাপুর গ্রামের সোবহান বিশ্বাসের ছেলে কৃষক বাবর আলী বিশ্বাসের গোয়াল ঘর থেকে ২টি সিংদী শাহীয়াল জাতের লাল রঙের বড় গাভী এবং ১টি বকনা বাছুর মিলে মোট ৩টি গরু বাড়ির উঠানে থাকা গোয়াল ঘর থেকে চুরি হয়ে যায়। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।
একই বাড়ির মধ্যে বাবর আলী বিশ্বাসের বড় ছেলে মুজিবুর রহমানের জার্সি জাতের বড় ১ টি গাভী, ১টি বকনা এবং ১টি ষাঁড় গরু মিলে মোট ৩টি গরু তার গোয়াল ঘর থেকে চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। বাড়ির পাশে প্রতিবেশী সোবহান মাস্টারের দুই ছেলের মধ্যে মিলন মিয়ার গোয়াল ঘর থেকে ১টি দেশি গাভী, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৮০ হাজার টাকা এবং মোহাম্মদ মন্নুর গোয়াল ঘর থেকে ১টি বড় ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী ও ১টি ষাঁড় গরু একই সময় চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা।
যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২ লাখ টাকা। গ্রামটিতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারী প্রত্যেকের পেশা কৃষিকাজ। কৃষি কাজের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন জাতের গবাদি পশু পালন করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় শতাধিক গরুর খামার রয়েছে। আর গরু রয়েছে কয়েক শতাধিক। এক রাতে গোয়াল ঘর থেকে এভাবে গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় খামারীরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী খামারী বাবর আলী বিশ্বাস কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাতে গোয়ালে গরুর খাবার দিয়ে ঘুমাতে যাই। রবিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে যেয়ে দেখি আমার ৩ টি গরুর একটিও নেই। খোঁজাখুঁজি শুরু করলে কিছুক্ষণ পর জানতে পারি আমার ছেলে মজিবরের গোয়াল থেকেও তিনটা গরু নিয়ে গেছে চোরে। পরে দেখি প্রতিবেশী মিলন ও মন্নুর গোয়াল থেকেও তিনটি গরু নিয়ে গেছে চোরেরা।
ধারণা করছি রাত আনুমানিক ৩ টার সময় চোরেরা গোয়াল ঘর থেকে গরুগুলো চুরি করে পিকআপ কিংবা ট্রাকে করে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেছে। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। গরুগুলোই আমাদের সম্বল ছিল। তাও আজ চুরি হয়ে গেলো। এই ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে উঠবো তা ভাবতে পারছিনা। কিছুক্ষণ পর থানায় যেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করবো।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু আজিফ বলেন, গরু চুরির ঘটনা শুনে আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাদের সাথে কথা বলেছি। অতিসত্বর তদন্তপূর্বক চোরচক্রের সদস্যদেরকে আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি যোগ করেন।