জাহাঙ্গীর আলম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত কমপ্লেক্স ভবনের এসএস পাইপের কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট অফিসের কারোর জানা নাই কাজে তথ্য।
বিষয়টি জানতে চাইলে চটে গিয়ে কেন কি হবে এমন সব পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন প্রতিবেদককে উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্ধার্থ কুমার কুন্ডু।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়,গত ২৫-০৫-২০২৩ সাল থেকে ৬ কোটি ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬শ ৬৩ টাকা ব্যয়ে এগিয়ে চলেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের নির্মান কাজ। এ কাজটি পান চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের জাকাউল্লা কনস্ট্রাকশন। পরে কাজটি কিনে করছেন মহেশপুরের মেসার্স মনিরুল আলম খান নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
ওই ভবনের নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। বর্তমানে কাজ চলছে এসএস পাইপের।
অভিযোগ উঠেছে এ কাজে ব্যবহারিত এসএস পাইপের পুরুত্ব বা ফিটনেস নিয়ে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে কে অবগত করা হলে,তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাকে ঘটনা দেখে রিপোর্ট দিতে বলেন। তবে আজও রিপোর্টটি দেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে এ কাজের অনিয়ম খুজতে গিয়ে প্রথমে এ প্রতিবেদক খোজ করেন কাজ দেখা শোনা করা উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে। অবশেষে জানা যায় তিনি উপসহকারি প্রকৌশলী হুজাইফা রহমান। তিনি রয়েছেন দেড় মাস যাবৎ ট্রেনিংয়ে বাইরে।
মুঠো ফোনে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, সিডিউল না দেখে কিছু বলা সম্ভব না। আর আমি রয়েছি ট্রেনিংয়ে বাইরে। কাজটি দেখার জন্য অফিসের সার্ভেয়ার আলী আহম্মদ কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি সব বলতে পারবেন।
এবার এ প্রতিবেদক গেলেন সার্ভেয়ার আলী আহম্মেদের কাছে। জিজ্ঞাসা করা হল এসএস পাইপ নিয়ে। তিনি বললেন,কাজটি আমার না। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আপনারা প্রকৌশলীকে জিজ্ঞেস করেন।
শেষ ভরসা ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এটা সঠিক জানা নাই। সিডিউল দেখে বলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দুই এক দিনের মধ্যে আপনারা নতুন প্রকৌশলী যোগদান করবেন। আপনারা ওনার কাছে জিজ্ঞেস করলে সব পাবেন।
রবিবার ছিল উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্ধার্থ কুমার কুন্ডুর এ উপজেলায় প্রথম কর্ম দিবস। বিষয়টি জানতে চাইলে প্রতিবেদকের উপর চটে গেলেন তিনি। পাল্টা প্রশ্ন করলেন প্রতিবেদককে। বললেন কেন আপনারা এ সব জেনে কি করবেন, আপনারা কি এ কাজটি করছেন।
এরপর তিনি বলেন, আমার কিছুই জানা ছিল না। আমি এখন জানতে পারলাম। খোজ নিয়ে দেখি কোথায় কি সমস্যা হয়েছে।
ঠিকাদার জাকাউল্লা বলেন, এখন কাজ খারাপ করার কোন সুযোগ নাই। কাজ শেষে সংশ্লিষ্ট অফিস কাজ মেপে বুঝে নিবেন। হয়তো কোনো দোকানদারের কাছ থেকে মাল কিনিনি সে আপনাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছে।
যেমন পাইপ দিয়ে কাজ করার কথা, সেটা দিয়েই করছেন তারা এমন দাবি ঠিকাদারের।
ঠিকাদার মনিরুল আলম খান (মিন্টু)বলেন, কাজটি আমি কিনে করছি। আর ওই কাজের এসএস পাইপের কাজটি বিক্রি করে দিয়েছি ঢাকার পাটির কাছে। এ জন্য কি হচ্ছে বলতে পারবো না। তবে এটা দেখে নেওয়ার দায়িত্ব ইন্জিনিয়ার অফিসের, ওনারা কি করছেন। তিনি বলেন, আমি আগামী কাল কাজের সাইডে যাব। কাজ খারাপ হলে সব খুলতে হবে তাদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে বলেন, ওটা তো প্রকৌশল বিভাগের কাজ। ওই সম্পর্কে ওনারা ভাল বলতে পারবেন।
তিনি বলেন, দিন শেষে সবই আমার মধ্যে, এ কারনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দেখে রিপোর্ট দিতে বলেছি। তবে তারা এখনো পর্যন্ত কোন রিপোর্ট আমাকে দেননি। এভাবেই চলছে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের নির্মানধীন ভবনের এস এস পাইপের কাজ। কোন সদোত্তর নাই কারো কাজে। কেউ জানেন না কাজ সম্পর্কে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।