বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
ভয়ংকর এক আতঙ্কের নাম রাসেল ভাইপার সন্ধান মিলেছে ২৮ জেলায় বাদ পড়েনি খুলনা।
তীব্র গতি বিষাক্ত সাপটি এখন সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত আতঙ্কের বিষয় হয়ে উঠেছে যদিও বিষাক্ত এই সাপটি প্রথম দেখা মেলে পদ্মার পাড়, শিবচর, মাদারীপুর, কালকিনি এলাকা জুড়ে তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অঞ্চল জুড়ে বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার কারণে উজান ধেয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে বংশবিস্তার করছে। কারণ ভারতে কোথাও বন্যা হলে বাদ পড়ে না বাংলাদেশেও পানিতে প্লাবিত হতে সেহেতু দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে রাসেল ভাইপার এখন দেশের ২৮ টি জেলার আগ্রাসন দখল করে বসেছে।
সপ্তাহ খানেক আগে খবর পাওয়া গিয়েছিল খুলনা বিভাগের সর্বপ্রথম বাগেরহাট জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গৌরম্ভা গ্রামের কৃষক মহিতোষ দাসের পাট খেতে একটি রাসেল ভাইপার সাদৃশ সাপ দেখতে পেয়ে সমগ্র গৌরম্ভা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক।
তবে গতকাল দেখা মিলেছে খুলনা শহরের কোল ঘেসা জেলখানা নদীর ওপাড় সেনেরবাজার রাস্তার ওপর, খালিশপুর ন্যাশনাল জুট মিলের অভ্যন্তরে, এবং বটিয়াঘাটা নদীর পাড়ে ফলে খুলনা শহরবাসীদের মনেও ঢুকেছে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক। সে ক্ষেত্রে শহরের যে সকল বাড়ির মধ্য ঝোপঝাড় জঙ্গল রয়েছে সে সকল ঝোপঝাড় জঙ্গল পরিষ্কার করে ব্লিসিং পাউডার ছড়াতে দেখা গেছে।
কারণ দ্রুতগতির উগ্র মেজাজের সাপটির সন্ধান পাওয়ার কথা শুনে আতঙ্কগ্রস্থ খুলনা এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষেরা।
রাসেল ভাইপার বসবাস করতে পছন্দ করে জলাভূমি পরিত্যক্ত জায়গা জন চলাচল বিহীন স্থান বিস্তীর্ণ মাঠে ঝোপঝাড়ের মধ্য এবং ডুবানালা ও নদীর পানি এদের স্বাচ্ছন্দের জায়গা।
সব থেকে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে রাসেল ভাইপার মানুষ দেখলে তাড়িয়ে নিয়ে দংশন করা পাশাপাশি ইদুর ব্যাঙ ছোট সাপ মাছ এদের প্রিয় খাবার সাধারণত এরা ইঁদুরকে ছোবল দিয়ে ছেড়ে দেয় পরে ছোবল দেওয়া ইঁদুরটি বিষক্রিয়ার যন্ত্রণায় ছটফট করে গর্তে ঢুকলে গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অন্যান্য ইঁদুর গুলোকে আহার হিসাবে ভক্ষণ করে রাসেল ভাইপার। এটাও জানা যায় সাম্প্রতিক পদ্মারপাড় এলাকার ঝোপঝারের মধ্য দীর্ঘদিন পড়ে থাকা একটি গাছের গোরা থেকে থেকে রাসেল ভাইপার এবং ছোট ছোট ৬০ টি বাচ্চা সহ উদ্ধার করে স্থানীয় এলাকাবাসী পরে সবগুলিকে মেরে জনসম্মুখে এনে দেখানোর পরে এলাকা জুড়ে রাসেল ভাই পাড়ের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে খবর পেয়ে সেখানকার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পেয়ে সেখানকার উপস্থিত মানুষদের রাসেল ভাইপারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দিয়ে বলেন রাসেল ভাইপার সাপটি দেশ থেকে বিগত বহু বছর ধরে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল তবে মাঝেমধ্যে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে আসা জেলেদের জালে দুই একটি ধরা পড়লেও সেগুলোকে অবমুক্ত করে দেয়া হতো ধারণা করা যাচ্ছে সেই দুই একটি সাপ দীর্ঘদিন যাবত দেশে বিচারণ করে বংশবিস্তার করে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে পাশাপাশি ভারতে বন্যা হওয়ার কারণে রাসেল ভাইপাড় সহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ বন্যার পানিতে ভেসে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে সাপ গুলো অতি দ্রুত গতিশীল বদ মেজাজি এরা একসাথে ১০ থেকে ৮০ টা পর্যন্ত ডিমের পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা প্রসব করার সক্ষমতা রাখে।
তবে রাসেল ভাই পারে আতঙ্ক না হয়ে সতর্কভাবে চলাফেরাকরাটাকে আমি শ্রেয় মনে করছি। অপরদিকে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কর্তার সাথে যোগাযোগ করলে রাসেল ভাইপাড় সম্পর্কে তিনি বলেন শুনেছি এদেশের বিভিন্ন জেলাতে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্য খুব দ্রুত রাসেল ভাইপার নামের সাপ ছড়িয়ে পড়েছে এবং অতি দ্রুত বংশবিস্তার করছে। গতকাল সন্ধ্যায় লোক মুখে এটাও শুনেছি আমাদের খুলনা জেলার শহর অঞ্চলের আশপাশ দিয়ে বেশ কিছু রাসেল ভাইপার সাপ মানুষের নজরে পড়েছে তবে এটা আমি নিশ্চিত করতে পারি আতঙ্ক ছড়ানোর পর থেকে আজকের দিন পর্যন্ত আমার খুলনা বিভাগের কোনো হাসপাতালে রাসেল ভাইপারে ধ্বংসিত কোনো একজনও রোগী চিকিৎসা নিতে আসেনি বা ভর্তি হয়নি। তিনি আরো বলেন রাসেল ভাইপারে যদিও দংশন করে সেক্ষেত্রে ১২০ মিনিট পর্যন্ত মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে স্বাভাবিকভাবে নিকটস্থ হাসপাতালে এসে এন্টিভেনম প্রয়োগ করলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। পাশাপাশি একেবারে আতঙ্ক নাই বললেও ভুল হবে কারণ দ্রুত চিকিৎসা নিতে অবহেলা করলে ধ্বংসিত স্থানে পচন ধরে গ্যাংগ্রিন কিডনি ইফেক্ট হার্ট ফেইল লিভার নষ্ট সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয় ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। অপরদিকে খুলনা সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানিয়েছেন রাসেল ভাইপারের দংশন করলে সাথে সাথে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে অ্যান্টি ভেনাম সহজেই মিলবে খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ রয়েছে ।
তবে রাসেল ভাইপারে আতঙ্কিত না হয়ে বরং সচেতনতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করলে রাসেল ভাইপারের মতো আতঙ্ক প্রতিহত করা সম্ভব।