বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
একেতো সারাদেশ জুড়ে বইছে কাঠফাটা রৌদ্র খরতাপদহ উত্তপ্ত গরম একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলানোর কোথাও কোন জায়গা নাই তার মধ্যি আবার সারা দেশের সাথে সুর মিলিয়ে নতুন দুঃসংবাদের আভাসে খুলনার আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন চলমান তাপাদহ অব্যাহত থাকবে এবং তাপমাত্রা আরও বেড়ে আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যি সারাদেশে যেমন তেমন খুলনা বিভাগে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতে খুলনার আকাশে বৃষ্টি ও মেঘের কোন পূর্বাভাসই পরিলক্ষিত হচ্ছে না পাশাপাশি টানা ২৬ দিন তাপপ্রবাহে পুড়ছে খুলনা দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভাগ।
বিগত পঁচিশ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে এখন খুলনা। ফলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা এবং হিট অ্যালার্ট জারির পাশাপাশি সামাজিক সচেতন ব্যক্তিরা গরমে দগ্ধিত মানুষদের সেবামূলক কাজে নেমে সেবা দিচ্ছে পথচারীদের। এদিকে আবার রেকর্ড পরিমাণে গরমের কারণে গরম জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে খুলনার সকল সরকারি বেসরকারি ও মীরের ডাঙ্গা ডায়রিয়া হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। সকাল থেকেই কাঠফাটা রোদের তপ্ত উত্তাপে রাস্তার পিঁচ ও বিটুমিন গলে গাড়ির চাকা ও পথচারীদের পা আটকে ধরছে।
অপর দগ্ধিত গরমে পুকুরের পানি তপ্ত হওয়াতে ছটফট করে মারা যাচ্ছে ঘের ও পুকুরের মাছ। গাছগাছালি গরমের উত্তাপে তেঁতে উঠেছে কৃষকের মাঠের রবি শস্য শাকসবজি ফসলাদির সবকিছুই রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়ে নষ্ট হচ্ছে ফলে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে সবজি বাজারে তারই কারণে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। এদিকে গৃহপালিত পশু ও সকল ধরনের প্রাণিকুল অগ্নি গরমের আভায় অতিষ্ট হয়ে দিকবিদিক ছোটাছুটি করছে একটু ছায়া প্রশান্তির প্রত্যাশায়। স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রমিক শ্রেণীর খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের জীবন। অধিক গরম আর গাত্র ঘামের দাবদহে নাভিস্বাস উঠছে ফলে পানি শূন্যতার কারণে তৃষ্ণা মেটাতে হাউহুতাশ করছে মানুষ তবে খুলনার বেশ কিছু সামাজিক সংগঠনের যুবকরা নিজ উদ্যোগে তৃষ্ণার্ত পথচারীদের তৃষ্ণা মিটানোর লক্ষ্যে চলন্ত পথের বিভিন্ন এলাকায় ঠান্ডা পানি স্প্রে ও তাবুটানিয়ে বিশ্রামের ব্যবস্থা করে বসার জন্য পার্টি বেঞ্চ টুল ক্লান্ত পথচারীদের ক্লান্ত নিবারনের জন্য কমল পানীয় পানের ব্যবস্থা রেখে সেবা প্রদান করেছে ক্লান্ত পথচারীদের । পাশাপাশি রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠন থেকে পথচারীদের মাঝে বোতল জাত পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করছে এবং নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলররা জনগণের স্বার্থে মাইকিং করে সকলকে সচেতন ও সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য আহ্বান করছেন । প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও এক পশলা বৃষ্টির জন্য পরম করুনাময় এর নিকট সকল ধর্মের মানুষেরাই একটু বৃষ্টির প্রত্যাশায় দুহাত তুলে প্রার্থনা করছে। এদিকে আবার হাসপাতালের চিকিৎসকরাও দিচ্ছেনা ভালো কোন সংবাদ খুলনা মীরেরডাঙ্গা ডায়রিয়া হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক প্রফুল্ল হালদার বলছেন প্রচন্ড গরমে পানি শূন্যতা হয়ে হিট স্ট্রোক, পাতলা পায়খানা, আমাশা, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের রোগীদের চাপে দিশেহারা চিকিৎসকরা। অসুস্থ রোগীদের মধ্য বেশিরভাগই রয়েছে শিশু ও বয়স্করা শরীরে পুশ করা স্যালাইন খাবার স্যালাইন ডাবের পানি সব কিছুরই সংকট হয়ে পড়েছে হঠাৎ করে রোগীদের সুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন বেশি বেশি কমল পানীয় পান আর ডাবের পানি স্যালাইন খাবার স্যালাইন ব্যবহার করার জন্য এদিকে গরম জনিত রোগীদের চাপে শহরের সরকারি বেসরকারি কোন হাসপাতালে রোগীর চাপে পা ফেলাবার জায়গা নাই। পাশাপাশি এসকল রোগীদের স্বজনরা বলছে ডাক্তারদের সাথে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি বাধ্য হয়ে কোন উপায়ান্ত না পেয়ে রোগীদের সাথেই আমাদের রাত্রিযাপন সহ সব সময় থাকতে হচ্ছে।
একই রোগে আক্রান্ত অসংখ্য রোগী থাকার কারণে হাসপাতালের পরিবেশও যেন চরম দূষিত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি সংকট দেখা দিয়েছে গরম জনিত রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্যালাইনের যা ও মিলছে তা অধিক দামে কিনতে হচ্ছে সব কিছু মিলে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ জনজীবন তবে এত গড়ম বিগত ৩০-৩৫ বছরে আমরা উপলব্ধি করিনি এর মধ্যে আবার শুনতেছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নাকি ৪৫ থেকে ৪৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছাড়ায়ে যাবে তাহলে তো বাঁচার কোন উপায় থাকবেনা মানুষ সিদ্ধ হয়ে যাবে।