বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুলনা নগরবাসীর জীবনে যন্ত্রনার আরেক নাম ইজিবাইক, একদিকে যেমন আধা ঘন্টার মুষল ধারা বৃষ্টির পানি প্লাবিত হয়ে ডুবে যায় সড়ক সহ এলাকার অলিগলি আর এতেকরে জরাজীর্ণ সড়কের খানা খন্দর খুঁজে না পেয়ে
সমস্যা সৃষ্টি হয় পথচারীদের। অপরদিকে লাইসেন্সবিহীন অসংখ্যক ইজিবাইক অনিয়ন্ত্রিত ভাবে চলাচলের কারণে যানজট ও ঘিঞ্জি শহরে পরিণত হয়েছে।
ফলে জনজীবনে গোদের ওপর বিষফোঁড়া এখন পরিবেশ দূষণকারী বিদ্যুৎ খেকো ইজিবাইক।
সিটি কর্পোরেশনের ৩১ টি ওয়ার্ডের ১৫ লক্ষ জনগণই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা আর এ সকল ইজি বাইকের মধ্য রয়েছে অধিকাংশই আনফিটনেস বডি অনভিজ্ঞ চালক
সাথে ট্রাফিক পুলিশদের উদাসীনতা রয়েছেই।
পাশাপশি ট্রাফিক পুলিশদের গোপন মাসোয়ারায় পারপেয়ে যাচ্ছে অসংখ্য ভাঙ্গাচুড়া আনফিটনেস ইজিবাইক ও তিন চাকার ইঞ্জিন চালিত রিক্সা।
এ ব্যাপারে মাঝেমধ্যে স্থানীয় ও জাতীয় পত্র পত্রিকায় ইজিবাইক কর্তৃক দুর্ঘটনায় পথচারীদের হতাহতর ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হলেও সাময়িক সময়ের জন্য প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও এক দুই দিন যেতে না যেতেই পূর্বের রূপ নিয়ে আবারো শহর জুড়ে বীরদর্পের সাথে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় অসংখ্য ইজিবাইক।
আর ইজিবাইক দ্বারা দুর্ঘটনা কবলিত রেড জোন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে নগরীর বেশ কিছু স্থান তার মধ্য অন্যতম স্থান হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে খুলনার ৭ রাস্তার মোড়, ময়লা পোতার মোড়
ডাকবাংলার মোড়, ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউস মোড়,শান্তিধাম মোড় পিটিআই চার রাস্তার মোড়, রূপসা মোড় সহ নগরীর উল্লেখযোগ্য বেশকিছু স্থান রয়েছে যে সকল স্থানে ট্রাফিকতো নাই তারপর আবার দীর্ঘদিন যাবৎ ধীরগতিতে সড়ক মেরামতের কারণে খানাখন্দরে পরিণত হওয়াতে অসংখ্য বহিরাগত ইজিবাইক চালকেরা এ সকল সড়কের ধারণা না থাকায় বেগতিক গাড়ি চালানোর কারণে খানাখন্দরের মধ্যি এসে পড়ে দুর্ঘটনায় নিপতিত হচ্ছে।
অপরদিকে খুলনা নগর ভবনের ইজিবাইক লাইসেন্স শাখার বরাতের তথ্য অনুযায়ী জানাযায় কেসিসির লাইসেন্স শাখা থেকে মাত্র ১০থেকে ১৫ হাজার ইজি বাইকের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে অথচ সরজমিনের তথ্যেয় উঠে এসেছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার অঘোষিতভাবে লাইসেন্সবিহীন বিদ্যুৎ খেকো পরিবেশ দূষণ কারী ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ব্যস্ততম এই ঘিঞ্জি শহরে প্রতিনিয়ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সাথে রয়েছে প্রায় লাখের কাছাকাছি তিন চাকার রিক্সা আর সবকিছু মিলে যানজটের নাগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা শহর।
বিশেষ করে থ্রি হুইলার ও ইজি বাইকের
চালকরা একেবারে অনভিজ্ঞ যারা গাড়ি চালানোতো দূরের কথা ঠিক ভাবে ট্রাফিক আইন সম্বন্ধেও একেবারে তারা অজ্ঞ জারকারণে নগরীর প্রধান প্রধান এলাকা জুড়ে সারাদিনই লেগে থাকে তীব্র যানজট পাশাপাশি দুর্ঘটনা তো রয়েছেই।
বিশেষ করে ইজিবাইক দ্বারা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় কবলিত হচ্ছে কমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।
তবে এ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে গত ১৫ জানুয়ারী মঙ্গলবার খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও
কেএমপি কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা বৈঠকের মাধ্যমে এই পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইজি বাইকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করে লাইসেন্স বন্ধসহ নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পথচারীদের দুর্ঘটনার কবল থেকে বাঁচাতে সঠিক পরিকল্পনামাফিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তারা এ সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তবে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও শহরব্যাপী রীতিমত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ইজিবাইক থ্রি হুইলার ও তিন চাকার ইঞ্জিন চালিত রিক্সা।
অথচ তার কোনো প্রতিকার স্বরূপ কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি আজ পর্যন্ত।
তবে এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্তারা বিশেষভাবে ইজি বাইকের লাইসেন্স বন্ধসহ যে সকল অবৈধ লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক রয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে চলাচল নিষিদ্ধ করার কথা থাকলেও গোপনে বেশ কিছু লাইসেন্স নবায়নও করেছে সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স বিভাগের কর্তৃপক্ষ। তবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স শাখার বরাতে প্রথম ধাপে ৭ হাজার ৮ শত ৯৬ টি ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও লাইসেন্স শাখার সংশ্লিষ্ট অন্য আরেক কর্মকর্তার তথ্য উঠে এসেছে তার দ্বিগুণ সংখ্যা।
এদিকে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া গল্লামারি নিরালাসহ শহরের আশপাশ এলাকা জুড়ে ছোট বড় চার্জিং পয়েন্টে রয়েছে একশতর উর্ধ্বে আর এ সকল চার্জিং পয়েন্ট গুলো অধিকাংশই সনাতন পদ্ধতিতে বিলিং সিস্টেম চালু থাকায় এলাকাভিত্তিক পিডিবির ইঞ্জিনিয়ার ও প্রতিটি চার্জিং পয়েন্ট এর মালিকদের সাথে গোপন সখ্যতা থাকায় সরকারের অর্থব্যয়ের মাধ্যমে উৎপাদিত পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ খাতে হচ্ছে দুই নাম্বারি।
ফলে সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে লোকসানে গুনতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ।
আর এই চার্জিং পয়েন্টের হিসাব অনুযায়ী হিসাব করলেও প্রতিদিন নগরীতে ইজিবাইক চলছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার।
অপরদিকে শহরের স্থানীয় অধিকাংশ ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ আমাদের নগরজুড়ে যতগুলো ইজিবাইক দেখছেন তার অধিকাংশই শহরের বাইরে ডুমুরিয়া, ফুলতলা, রুপসা, পুটিমারি, বটিয়াঘাটাসহ অন্যান্য এলাকা থেকে হাজার হাজার ইজিবাইক সকাল হলেই প্রতিনিয়ত ঢুকছে খুলনা শহরে।
আর বহিরাগত যেসকল ড্রাইভাররা গাড়ি নিয়ে শহরে ঢুকছে তাদের ট্রাফিক আইন ও ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও উঠে এসেছে প্রশাসনিক কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের গোপনে ড্রাইভারদের থেকে উৎকোচ গ্রহণ করার কারণে আনফিটনেস অচল এবং লাইসেন্স বিহীন অনভিজ্ঞ ড্রাইভাররা অনায়াসে চালাচ্ছে গাড়ি।
সবকিছু মিলে প্রদীপের নিচেয় অন্ধকার থাকায় কোনো প্রতিকার হচ্ছে না বলে নগরীর ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।