বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কর্তৃক প্রতীক বরাদ্দ ও ভোটে অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের জনসংযোগ লিফলেট বিতরণ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেলেও মাঠে নাই অন্যান্য বিরোধীদল ও স্বতন্ত্র কোন প্রার্থী।
ফলে আজকের দিন পর্যন্ত খুলনা জেলার ছয়টি নির্বাচনী মাঠ একেবারেই নিরাপত্তা বললে চলে।
যদিও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র হাতে গোনা ১৭ দিন অথচ দেশের ৩০০ টি আসনের মধ্যো খুলনা জেলার ৬ টি নির্বাচনী এলাকা নিয়ে বিভিন্ন মেরুকরণ থেকে হিসাব নিকাশ করলে ও গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংবিধানের মেরুদন্ড জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একেবারে নিরুৎসাহিত বিরোধী দলীয় প্রার্থী সহ ভোটাররা।
তার মুখ্য কারণ হিসেবে জোরালো অভিযোগ উঠেছে ৬ টি আসনের সকল শ্রেণীর মানুষদের মাঝে।
তার মধ্য প্রধান কারণ হিসেবে দেশের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে না থাকায় প্রাণহীন নির্বাচনে হচ্ছেনা কোনো পাল্টা পাল্টি জোড়ালো প্রচার প্রচারণা।
জমে উঠেছে না চায়ের কাপের আড্ডা।
অপরদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছিলেন দলীয় পদে থাকা অবস্থায় যদি কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেই ক্ষেত্রে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না।
অথচ সেই সকল স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কে কৌশলগতভাবে নির্বাচন কমিশনার এর জেলা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এর ক্ষেত্রে বেশ কিছু হেভিওয়েট ব্যক্তিদের বিভিন্ন কারণ দর্শানো অহৈতুকী কারণ দেখিয়ে তাদের নির্বাচনের তফসিল বাতিল বলে ঘোষণা করার কারণে প্রার্থীসহ জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তাছাড়া খুলনা – ৩ আসনের সাবেক তিন তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানকে গুরুত্বপূর্ণ এই সংসদ নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করলে বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সমর্থনকারী ভোটাররা চরম হতাশা ব্যঞ্জতায় ক্ষোভে কষ্টে রাজপথ অবরুদ্ধ করে উত্তাল বিক্ষোভে মেতে ওঠে এলাকার হাজার হাজার শ্রমিকরা।
এক্ষেত্রে জনগণের চোখের ভাষা মনের কথা না বুঝে ওই আসনে মন্নুজানের বিপরীতে চমকপ্রদভাবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন করে নৌকার বৈঠা হাতে তুলে দিয়েছেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ।
অপরদিকে খুলনা -১ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ননীগোপাল মণ্ডল দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও বঞ্চিত হয়েছে সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায় সে ক্ষেত্রে তিনি এলাকার ভোটারদের মতামতের সাথে মত পোষণ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। তা সত্ত্বেও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় এ আসনে কোন শক্ত প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনী মাঠ একেবারে ঠান্ডা রয়েছে।
খুলনা-২ আসনে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুসপুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল আবারও নৌকার প্রার্থী হওয়ার কারণে
এ আসনেও কোন জোরালো প্রার্থী নাই।
৩ আসনের আলোচনা আগেই করা হয়েছে অতএব এবার খুলনা -৪ আসনে একাধিক হেভি ওয়েট প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দৌড় ঝাপ করলেও বর্তমান সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি বাংলাদেশের অন্যতম ব্যবসায়ী এনবয় গ্রুপের কর্ণধর আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিজ্ঞ ব্যাক্তিদের বিবেচনায় পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন । তবে ওই আসন থেকেই খুলনার দক্ষিণ বাংলার চার আসনে বারবার নির্বাচিত সিংহ পুরুষ আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা এবং জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ প্রয়াত এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই এস এম মোর্তজা রশিদী দারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রার্থী হলেও রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল করলে তিনি হাইকোর্টে আপিল করার পর আবারও ফিরে পান তানার প্রার্থিতা ।
অতএব ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠ সরগম করতে ফিরে আসার কারণে হ্যাবি ওয়েট দলীয় প্রার্থী সালাম মুর্শিদীর দুর্গের দুশ্চিন্তার কালো আঁধার গ্রাস করেছে।
এদিকে খুলনা -৫ আসনের সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ফের নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। সেখানেও ফুলতলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। আর ওই কারণে তাকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। তা সত্ত্বেও তানার মনোনয়নপত্র রিটার্নিং অফিসার বাতিল বলে গণ্য করেন। পরে তিনি পুনরায় নির্বাচন কমিশনে আপিল করলেও মঙ্গলবার সেখানেও তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
যে কারণে খুলনা-৫ আসনে আবারও সংসদ সদস্য হওয়ার দ্বারপ্রান্তে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
যার কারনে বেশ কিছুদিন যাবৎ বিভিন্ন প্রার্থীদের দৌড়ঝাপে ডুমুরিয়া ফুলতলা এলাকায় নির্বাচনী উত্তাপ জোরালো থাকলেও তা বর্তমান একেবারেই নিভে গেছে।
খুলনা-৬ আসনে নির্বাচনী আলোচনার কোন কেন্দ্রস্থলে না থাকা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশিদুজ্জামান মোড়ল নৌকার টিকিট পেয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
তবে এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জিএম মাহবুবুল আলম। অতএব এখানেও তার মনোনয়ন রিটার্নিং অফিসার বাতিল করেন। তবে তিনিও নির্বাচন অফিসা বরাবর আপিল করে পুনরায় প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে এলাকায় শক্তভীদ তৈরী করলেও এখন পর্যন্ত এলাকায় নেই কোন প্রচার-প্রচারণা।
জমে ওঠেনি আজকের দিন পর্যন্ত নির্বাচনী গাল-গপ্প আলোচনা সমালোচনা। অতএব এক পক্ষের প্রচার প্রচারণা জনসংযোগে নির্বাচনী বাতাস বইছে না।