বিপ্লব সাহা,খুলনা ব্যুরো:
আজ ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার খুলনায় পরম অবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী,উৎসব নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহাসমারহের সাথে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে এই মহতি অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়।
শ্রীমদ্ভাগবত গীতার ব্যাখ্যায় বর্ণিত আছে যে দ্বাপরযুগে ভগবানের শুদ্ধ ভক্তগণ যখন কংসের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অতি অগোচরে লুকিয়ে পরম আরাধ্যর সেবা করতে বাধাগ্রস্ত হয়ে অসুরদের হাতে মৃত্যুবরণ করতে হতো ভক্তদের।
তাছাড়া পৃথিবীতে অন্যায় অত্যাচার মদ্যপান ব্যভিচারের পাপে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে অঘোর অন্ধকারে পতিত হতে বসেছিল ঠিক সেই মুহূর্তে আজ থেকে ৫২৪৯ বছর পূর্বে দ্বাপর ও কলিযুগের একেবারে সন্ধিক্ষণে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তানার ভক্তদের রক্ষা ও ধর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের রোহিণী নক্ষত্রে অষ্টমী তিথিতে মহাপ্রলয়ন্করী দুর্যোগের মধ্যো গভীর রাতে অত্যাচারী কংসের কারাগারে তারই ভগ্নী দেবকির অষ্টম গর্ভে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চিন্ময় গোলকধাম ছেড়ে মথুরায় আবির্ভূত হন।
তাই ভগবানের আবির্ভাব উপলক্ষে আজ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজনে বিকাল ৩ টায় ধর্মসভা গোলকমনি শিশু পার্কে আলোচনা সভা উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা মহানগর শাখা আওয়ামী লীগ সভাপতি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্যামল কুমার হালদার সভা পরিচালনায় ছিলেন পূজা উদযাপন পরিষদের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমান সাহা।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র খুলনা ২ আসনের এমপি শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল তানার বক্তৃতার মাধ্যমে আজকের হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের অন্যতম অনুষ্ঠান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী তিথির মুখ্য আলোচ্য বিষয়বস্তু তুলে ধরে বলেন দুষ্টের দমন সৃষ্টির পালনের লক্ষ্যে শ্রীকৃষ্ণের ধরাধামে আবির্ভূত হয়ে পাপ ও অধর্মকে ধ্বংস করে ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করে সাধুজনদের রক্ষা করেন সেহেতু আমরাও তানার মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের মধ্যে সেই চেতন বোধ জাগ্রত রাখা উচিৎ।
অথচ তা না করে অসাম্প্রদায়িক দেশে আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত রয়েছি।
দেশের এক শ্রেণীর অপসাম্প্রদায়িক মানুষেরা একে অপরের সঙ্গে সম্প্রীতির বন্ধন থেকে ছিন্ন করার অপকর্মে লিপ্ত হয়ে মেতে থেকে দেশ তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে বিশ্বের কাছে সমালোচিত করে তুলার পায়তারায় মেতে রয়েছে।
অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষদের নিয়ে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থেকে রাজনীতি করা ও সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা এবং সকল ধর্মের মানুষদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিটি ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণে তানার অভূতপূর্ব ভুমিকা ছিলো।
এ সময় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ চেয়ারম্যান খুলনা জেলা পরিষদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এমডিএ বাবুল রানা সাধারণ সম্পাদক খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখা এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কৃষ্ণ পদ দাস সভাপতি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা জেলা শাখা খুলনা মহানগর সভাপতি শ্যামল হালদার।
সভা শেষে গোলকমনি শিশু পার্ক হতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা ও নগর সংকীর্তন বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে দোলখোলা শীতলা মাতা ঠাকুরানির মন্দির প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।
এবং পরে উপস্থিত সকল ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
তাছাড়া অনুষ্ঠানমালায় সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মধ্যরাতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজার্চনার মধ্য দিয়ে আজকের অনুষ্ঠান সমাপ্তির হবে।