নাজমুল হাসান সবুজ বিশেষ প্রতিনিধি খুলনা
আজ (রবিবার) সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিরোধে নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে। বিল ডাকাতিয়া এলাকা তথা ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জলাবদ্ধ এলাকার পানি অপসারণে স্থাপিত পাম্পে যদি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া প্রয়োজন হয়, তাহলে সংযোগ দ্রুত প্রদান করতে হবে। খুলনার শিপইয়ার্ড সড়ক সংস্কার কাজের ধীরগতি দূর করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়ে সভার আয়োজন করা প্রয়োজন।
সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ সফিকুল ইসলাম জানান, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে চার সপ্তাহ ধরে চলবে। এসময় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্রী অথবা ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) এর টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন সভায় জানান, এবছর অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদনে কৃষক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একারণে দুইহাজার কৃষককে মরিচ, টমেটো, লাউ, ব্রোকলি, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপির বীজ ও ২০ কেজি সার বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া ছয়হাজার একশত কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হবে। তিনশতজন কৃষক গম চাষের জন্য, সরিষা চাষের জন্য দুই হাজার কৃষক, সূর্যমূখী চাষের জন্য তিনহাজার ছয়শত কৃষক এবং শীতকালীন পেয়াজ চাষের জন্য দুইশতজন কৃষক বীজ-সার সহায়তা পাবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম সভায় জানান, খুলনা জেলায় ডিম উৎপাদনকারী মুরগির পর্যাপ্ত সংখ্যক হ্যাচারি নেই। খামারীদের প্রায় একশত টাকা মূল্যে একদিনের মুরগীর বাচ্চা সংগ্রহ করতে হয়। বাজারে মুরগির খাবার, বিদ্যুৎ ও ওষুধের দাম বৃদ্ধির ফলে ডিমের উৎপাদন খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ডিমের দামের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দেশে প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১১টাকা ৮৭পয়সা, সোনালি মুরগী প্রতিকেজি ২৬৯টাকা ৬৪ পয়সা এবং বয়লার মুরগী প্রতিকেজি ১৭৯টাকা ৫৯পয়সা নির্ধারণ করেছে। এই দাম ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সভায় দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিলডাঙ্গা এলাকায় নদীর পানির চাপে বেড়িবাঁধের ভাঙন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান। একই সাথে ডুমুরিয়া এবং ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে নদী-খালের মাধ্যমে দ্রুত পানি অপসারণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া সভায় জানান, ডুমুরিয়া-ফুলতলা এলাকার প্রায় সকল নদী-খালের তলদেশ ভরাট হয়ে উঁচু হয়ে যাওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে। একই কারণে এসকল নদী-খাল দিয়ে বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি অপসারণ করাও কঠিন। বিল ডাকাতিয়ার পানি অপসারণের জন্য শোলমারি স্লুইস গেটের রেগুলেটরগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে থাকা স্লুইসগেটগুলো খুলে পানি অপসারণের জন্য উক্ত এলাকার জনসাধারণসহ সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তানভীর আহমদ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) মোঃ আহসান হাবিব, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, খুলনা প্রেসক্লাবের আহবায়ক এনামুল হকসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন