হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামী বিল্লাল মিয়া, ননদ সুরমা ও তার স্বামী সাইফুলকে আসামি করে চুনারুঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুনারুঘাট উপজেলার জিকুয়া গ্রামে স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতনের শিকার রুহেলা আক্তার বলেন, ‘আমি ভাবছি মরে যাব, আল্লাহ বাঁচাইছে। তারা আমার হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করেছে, ঘরে আটকে রেখেছে। পুলিশ না গেলে তারা আমাকে মেরেই ফেলত। আমি এর বিচার চাই।
জানা গেছে, নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক এসআই ছদরুল আমীনের নেতৃত্বে একদল -পুলিশ বিল্লাল মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। নির্যাতনের শিকার রুহেলা জিকুয়া গ্রামের চান্দ আলীর মেয়ে।
গৃহবধূ ও তার স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা দিতে না ব্যর্থ হওয়ায় স্বামী, ননদ ও ননদের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করে।
জানা যায়, ২০০২ সালের জিকুয়া গ্রামের মৃত আলমাছ মিয়ার ছেলে বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে রুহেলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রুহেলাকে চাপ দিতে থাকেন বিল্লালসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ নিয়ে প্রায়ই তাকে নির্যাতন করা হত। ঘটনার দিন ব্যবসার জন্য এক লাখ টাকা চান স্বামী। গৃহবধূ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় প্রথমে স্বামী বিল্লাল ও তার ছোট বোন সুরমা তাকে বকাঝকা করেন। পরে ননদ সুরমার জামাই সাইফুল ইসলামসহ পরিবারের লোকজন রুহেলার হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। আহত রুহেলার চিৎকারে প্রতিবেশীরা তার বাবা-মাকে খবর পাঠান। পরে পরিবারের লোকজন ৯৯৯-এ কল করেন। মঙ্গলবার দুপুরে চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, নির্যাতনের শিকার রুহেলার স্বামী বিল্লালসহ অভিযুক্তরা পালিয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।