মুন্না ইসলাম আগুন স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী:
সংসদীয় আসন ৫৬, রাজশাহী ৫ পুঠিয়া দুর্গাপুর ।
দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে এই আসনে বিএনপির জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের দখলে ছিল ।এই আসনে সবশেষ তথ্য মতে মোট পুরুষভোটার: ১,৬৯,১৪৫ নারী ভোটার:১,৬৮,০৫৫তৃতীয় লিঙ্গ ভোটার: ৪
সবশেষ এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন আব্দুল ওয়াদুদ দ্বারা। কিন্তু ৫ই আগস্ট ২০২৪ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে এই আসনটি শূন্য হয়ে যায় । ফলে ভোটের মাঠে জামাত-বিএনপি এনসিপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষণা দিয়েছেন আগামী 2026 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ।
ফলে ভোটের মাঠে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল । জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র এখনো কোন প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়নি ফলে বিভিন্ন নেতাকর্মী উপজেলা জুড়ে ব্যানার ফেস্টুন মিটিং মিছিল সহ বিভিন্ন উপায়ে নিজেদের জানান দিচ্ছেন ।
এই আসনে দুই দুইবারের এমপি ছিলেন প্রয়াত অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা । দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে থাকা আসনটি ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম উদ্ধার করেন এবং বিএনপিকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন। তবে তার মৃত্যুতে অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে এ আসন ।
তবে ভোটের মাঠে রয়েছেন সাবেক এই নেতার পুত্র তরুণ নেতা জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময় ।
বাবার মৃত্যুর পরে পুঠিয়া দুর্গাপুরের মানুষ যেন তাকে পেয়ে উদ্ভাসিত হয়ে পড়েছেন। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ও সবার শীর্ষে তরুণ এই নেতা ।
দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি জনাব আব্দুল আজিজ মন্ডল এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান পুঠিয়া দুর্গাপুর আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট নাদিম মোস্তফা সাহেবের শূন্যতা এই আসনের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। তবে তার ছেলেকে পেয়ে অনেকটাই সকলের আশা পূরণ হওয়ার পথে। তিনি আরো বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান তাকে এই আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দিলে জনগণের আশা পূরণ হবে।
এদিকে দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমন আহমেদ সুমন বলেন পুঠিয়া দুর্গাপুরের ইতিহাসে নাদিম মোস্তফার মতন এমপি কখনো আসেনি । তিনি ছিলেন উন্নয়নের রূপকার ।আমরা চাই তার ছেলেকে যেন এই আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে তার বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দেন ।
পুঠিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনসুর রহমান মাস্টার বলেন আমরা দেখেছি নাদিম মোস্তফা জীবিত অবস্থায় কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি তিনি ছিলেন মহান নেতা ।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে শত শত মামলার আসামি ছিলেন তিনি । আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত তার জনপ্রিয় তাকে ভয় করত। ফলে তার বিরুদ্ধে সব সময় মামলা দিত। সর্বশেষ তিনি মারা যাবার সময়ও ৪৫টা মামলার আসামি ছিলেন । আমরা চাই এই আসনে যেন তার পরিবার থেকেই মনোনয়ন পায়। তার ছেলে জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময় সকলের চেয়ে জনপ্রিয়তা তার বেশি ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি জানান নাদিম মোস্তফা সাহেব এবং আমি দুজনেই একসঙ্গে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম আমি অনেকবার তার সঙ্গে তার আসনে গিয়েছি সেখানে তার জনপ্রিয়তা দেখে আমি মুগ্ধ। কিন্তু হঠাৎ তার মৃত্যুতে আমাদের শোকাহত করেছে। আমরা দোয়া করি নাদিম মোস্তফার মতন নেতা যেন প্রতিটি আসনে তৈরি হয়। তার আসনে তার ছেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আমরাও চাই সে যেন ওই আসনে এমপি হতে পারে।
প্রতিবেদন তৈরীর একপর্যায়ে আমাদের মুঠো ফোনে কথা হয় রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় বিএনপি’র বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রয়াত এডভোকেট নাদিম মোস্তফার ছেলে জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময়ের সঙ্গে
তিনি বলেন আমি খুব ছোট থেকেই বাবার সঙ্গে পুঠিয়া দুর্গাপুর আসনে বিভিন্ন প্রোগ্রামে যেতাম । আমি খুব কাছ থেকেই জনগণের প্রতি বাবার ভালোবাসা দেখেছি ।দেখেছি তিনি কিভাবে তাদের বিপদে-আপদে পাশে ছিলেন কিভাবে উন্নয়ন করেছেন । আমার বাবার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।
বাবার মৃত্যুর পরে পুঠিয়া দুর্গাপুরের মানুষ আমাকে যোগ্য মনে করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রেখেছেন। আমিও চাই তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে । বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে । আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় আমার বাবাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের কারণেই আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন মৃত্যুর সময় তার নামে একাধিক মামলা ছিল। জীবিত অবস্থায় তিনি আমাদের পরিবারের জন্য তেমন কিছু করে রেখে যেতে পারেননি। কিন্তু আমি গর্বিত আমার বাবা আমার জন্য অনেক সম্মান ও গৌরব রেখে গেছেন। আমার বাবা কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তার মৃত্যুর পরে এই আসনের বিভিন্ন প্রোগ্রামে গিয়ে আমি মানুষের মুখে তা শুনেছি।
বাবার অবর্তমানে এই আসনে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি দলের কেন্দ্রীয় নেতা হয় কমান্ড আমাকে যোগ্য মনে করেন বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেব যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করব।
দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার আমার পরিবারের দিকে তারেক রহমান সাহেবের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমাকে যেন এই আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয় ।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই নেতার জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। এই আসনের জনগণের একটাই দাবি সাবেক এই এমপি পুত্রকে যেন দলের নীতি নির্ধারকরা দলীয় মনোনয়ন মাধ্যমে জনগণের সেবা করার সুযোগ দেন ।
