পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বৃদ্ধ লিয়াকত আলীর (৬৮) উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্য এ.কে.এম মঞ্জিরুল হক সহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
গত শনিবার উপজেলার দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সোনাহার পূর্ব মুন্সিপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। হামলায় লিয়াকত আলী নামে সাবেক এক তহশিলদার গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় লিয়াকত আলী বাদী হয়ে মঞ্জিরুল হককে প্রধান আসামী করে ১২ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামী করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে সেনাবাহিনীর দেবীগঞ্জ ক্যাম্পের সহযোগিতায় পুলিশ ইতিমধ্যে এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যেমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সোনাহার পূর্ব মুন্সিপাড়া এলাকায় সোহাগ ইসলাম (২৫), মেসবাউর হক (৩৮), শরিফুল হুদা (৪১) ও নূর আমিন (২৯)।
মামলার এজহার ও পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঞ্জিরুল হক ও লিয়াকত আলীর মধ্যে দীর্ঘ দিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এই দুই পরিবারের মধ্যে এখনো দশটির বেশি মামলা চলমান রয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় লিয়াকত আলী নিজ বাড়ির প্রধান দরজার সামনে গাছের ডালপালা পড়ে থাকায় সেগুলো পরিষ্কার করছিলেন। এই সময় তার বাড়িতে মেরামতের কাজ করছিলেন রাজমিস্ত্রীরা। সে সময় হঠাৎ করেই মঞ্জিরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা এসে লিয়াকত আলীর কাছে সীমানা প্রাচীর ও বাড়ির প্রধান দরজা পুনঃনির্মাণ করার জন্য রাজমিস্ত্রী এনেছেন কিনা জানতে চান। এরপর দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে লিয়াকত আলীকে একা পেয়ে তার উপর ১২-১৪ জন হামলা করে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লিয়াকত আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পেও বিষয়টি জানানো হয়। পরে এঘটনায় জড়িত সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট লিয়াকত আলীর বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালিয়ে প্রধান দরজা, বাড়ির একটি ঘরের একাংশ ও সীমানা প্রাচীরের একাংশ ভেঙ্গে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সেই ঘটনায়ও দেবীগঞ্জ থানায় মঞ্জিরুল হককে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করেন লিয়াকত আলী।
লিয়াকত আলী জানান, শনিবার বাড়ির মেইন গেটের সামনে একটি গর্তে পড়ে থাকা খর পরিস্কার করছিলাম। এসময় মঞ্জিরুল সহ তার পরিবারের লোকজন আমাকে বেধরক মারধর করে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে কুপিয়ে কখন করে। আমি তাদের সাথে কোন কিছু নিয়ে কথা বলতে যাইনি। উল্টো তাড়াই আমাকে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করেছে। আমি জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
তবে এ বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি সদস্য এ.কে.এম মঞ্জিরুল হকের মুঠোফোনে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে রবিবার আদালতের মাধ্যেমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য মঞ্জিরুল হকের বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে জমি দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।