জেলা নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার(১০ ফেব্রুয়ারি) প্রতিষ্ঠান চত্বরে গভর্নিং বডির সভাপতি সরদার তানজির হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
জানা যায়, অনুষ্ঠানের ব্যানারে জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নাম প্রটোকল অনুযায়ী দেয়া হয়নি। জেলা ও উপজেলা বিএনপির অনেক নেতার নাম-গন্ধ নেয়া হয়নি। বরং নেতৃবৃন্দের সম্মানহানি করা হয়েছে। উত্তোরীয় ও ক্রেষ্ট দিয়ে বরণ করবার ক্ষেত্রেও আনাড়িপনা করা হয়েছে। ফলে অনুষ্ঠানের শৃংখলা যখন ভুন্ডুলের পথে ঠিক সেই মূহুর্তে লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শৃংখলা ও প্রটোকল ফেরানোর চেষ্টা করেন। অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজনিজ বসার আসন ছেড়ে বাহিরে চলে যাচ্ছিল, অতিথিদের বক্তব্য চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করছিলো। একে অন্যের সাথে কথা বলছিলো। শৃংখলা ফেরাতে কোন শিক্ষকের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
বক্তব্যকালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান স্বয়ং শিক্ষার্থীদের বিশৃংখলা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি শিক্ষকদের আচরণ ও ভূমিকা নিয়েও বিরুপ মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক শিক্ষকদের কে দ্রæত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবার জন্য ইউএনও কে নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের বলেন, মন দিয়ে পড়াশোনা শিখে ভালো মানুষ হবার চেষ্টা করতে হবে। পড়াশোনার পাশাপশি শৃংখলা শেখাটাও জরুরী। অনুষ্ঠানে আনাড়িপনা, অব্যবস্থাপনার জন্য জেলা বিএনপির দুজন নেতা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে গভর্নিং বডির সভাপতি তাদেরকে শান্ত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক তদবিরে গভর্নিং বডির সভাপতি হয়েছেন বিএনপির এক নেতার ভাই সরদার তানজির হোসেন। স্কুল-কলেজ চালানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান বা সামাজিক জ্ঞানের অভাব থাকলেও তিনি সভাপতির চেয়ার দখল করতে সক্ষম হয়েছেন। সরদার তানজির হোসেন সভাপতি হবার পর স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শৃংখলা বোধ কমতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও শৃংখলা নিয়ে যেন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অভিভাবকদের মধ্যেও এসব নিয়ে রয়েছে অসন্তোষ। অভিভাবকরা হতাশ। মানুষের মাঝে স্কুল ও কলেজের আয়-ব্যয় হিসাব নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। রাজনৈতিক বিবেচনায় একজন অযোগ্য আনাড়ি ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন অনেকেই। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা গভর্নিং বডির সভাপতি সরদার তানজির হোসেন এর অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে কথা বলতে পারছেন না এমনটাই জানা যায়।
অনুষ্টানে আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর, জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ মনিরুল ইসলাম, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু রিয়াদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবুল হাসনাত, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া, সরকারি পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম হায়াতুজ্জামান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস,এম ফেরদৌস রহমান, দপ্তর সম্পাদক মোঃ টিপু সুলতান, নড়াইল পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ তিলায়েত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফসিয়ার রহমান, লোহাড়গড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ আহাদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, লোহাগড়া পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ মিলু শরীফ প্রমুখ।