আব্দুল্লাহ আল মামুন পিন্টু,টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বসতভিটা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে শতাধিক ভুক্তভোগীরা। ৩০ আগস্ট,বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা ও গোবিন্দাসি ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া গ্রামের বসতভিটা হারানো ভুক্তভোগীরা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন ওই ভুক্তভোগীরা।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, ওই দুই গ্রামের পক্ষে হাবিবুর রহমান রমজান, যমুনা নদিতে বসতভিটা হারানো ভুক্তভোগী মো. সোহরাব আলী, মো. দুদু মিঞা, সাহেব আলী,কুরবান আলী, নজরুল পাঠান, আবু সাঈদ,জমেলা আক্তার প্রমুখ। এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ঘরবাড়ি হারানো নজরুল পাগলা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি উপজেলার নিকারাইল ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নে ৭. ৮২ মিটার জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং কাজ সম্পন্ন হলেও এর মাঝখানে ফাঁকা রয়েছে। এতে করে যমুনা নদির পানি ওই ফাঁকা অংশে চাপ পড়লে একদিনেই ৮ থেকে ১০ টি বসতবাড়ি নদি গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে দুই শতাধিক বসত ভিটাসহ স্কুল-মাদ্রাসা, মসজিদ ও ঈদগাঁ মাঠ।
হাবিবুর রহমান রমজান বলেন, নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা ও সারপলিশা গ্রামদুটি প্রমত্তা যমুনার ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে। কাগজ-কলমে নাম থাকলেও বাস্তবে রয়েছে বিশ শতাংশ। গ্রামের ৮০ শতাংশ নদি গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি হারিয়ে ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দ্রুত ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলে স্কুল,মসজিদ-মাদ্রাসাসহ শত-শত একর ফসলি জমি এবং বসতভিটা রক্ষার দাবি জানান তিনি।
মানববন্ধনে জমেলা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, ৮ শতাংশ বসতভিটা ছাড়া আমাদের আর কোন সম্পাতি নাই। চার মেয়েকে নিয়ে কোনমতে জীবন পরিচালনা করে আসছিলাম। গত শনিবার দুপুর দুইটার দিকে নদির ভাঙন শুরু হলে রাত দুইটার মধ্যে আমার বাড়িসহ ১০/১২টি বাড়ি নদি গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। অন্য জায়গায় বাড়ি করার মতো জায়গায়ও নেই। স্বামীসহ চার-মেয়েদের নিয়ে আমি কোথায় যাবো?
নিকরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় অংশে জিওব্যাগ ফেলানো হলেও কিছু জায়গা ফাঁকা রয়েছে। তবে ওই ফাঁকা অংশে দ্রুত জিওব্যাগ ফেলা হবে বলে জানান তিনি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রোকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন জানান, ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ও মাটি কাটা ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ৭.৮৫ মিটার জিও্যাগ ড্রাম্পিং কাজ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫ কি.মি. বেড়িবাঁধের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সম্প্রতি ভাঙন কবলিত এলাকায় বসতভিটা রক্ষায় জিওব্যাগ ড্রাম্পিংয়ের আশ্বাস দেন তিনি।