ঢাকাSaturday , 7 December 2024
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন আদালত
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. ইতিহাস
  10. কবিতা
  11. কুষ্টিয়া
  12. কৃষি
  13. খুন
  14. খেলাধুলা
  15. চাকুরী
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টাঙ্গাইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে টাকার গোপন সংকেত ছাড়া ভোগান্তি।

দেশ চ্যানেল
December 7, 2024 1:39 pm
Link Copied!

আব্দুল্লাহ আল মমামুন পিন্টু টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট আবেদনকারীর গোপন সংকেত কিংবা আইডি নম্বর ছাড়া মেলেনা পাসপোর্ট সেবা। অপরদিকে চ্যানেল ফি’র মাধ্যমে গোপন নম্বর ফেলতে গ্রাহকদের গুনতে হয় প্রায় ২৫০০ টাকা। এতে সহজেই নম্বরধারী গ্রাহকরা পাসপোর্টের সেবা পাচ্ছেন। এদিকে সাধারণ মানুষ গোপন নম্বর ছাড়া চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা এ ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ চান। দেশে সরকারের পরিবর্তন হলেও টাঙ্গাইলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দূর্নীতির কোন পরিবর্তন হয়নি। এখনো অফিসে পাসপোর্ট আবেদনকারীর গোপন ও আইডি নম্বর ছাড়া মেলে না পাসপোর্ট সেবা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবু জানান, পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন ব্যক্তি আছে তাদের মাধ্যমেই পাসপোর্টের আবেদন ফাইলের ভুলত্রুটি অথবা সংশোধন করে দেওয়ার নামে সুবিধা নিয়ে থাকেন। আর সেই সুবিধা নিতে গেলে মোবাইল বিকাশ নম্বরে লেনদেন করে থাকেন। আর সেই মোবাইল নম্বটির হোয়াটসঅ্যাপে দিতে হয় আবেদনকারীর রেজিস্ট্রেশন ও আইডি নম্বর। এরমধ্যে একজন ১০৫ নম্বর কক্ষে মাইনুল কবির ও জুবায়ের আহমেদ’সহ কয়েকজন রয়েছে । বাবু আরো জানান, তাদের সাথে সুনির্দিষ্ট দু-চারজন দালাল কাজ করে থাকেন। সেই দালালরা আবেদনকারীর ফরমে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও আইডি নম্বরটি মাইনুল কবিরের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। এরপর তার মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে তাদের সাথে লেনদেন করে থাকে। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক কয়েকজন দালাল বলেন, পাসপোর্টের জন্য নতুন আবেদন ফাইল অফিসে জমা পড়লে সে সমস্ত আবেদন ফাইল ছোটখাটো ত্রুটি অথবা কোন কাগজ না থাকলে আবেদন ফাইল জমা নেন না। সেই ফাইল নিয়ে যখন পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিরা বাহিরে আসে তখন তাদের সাথে কথা বলে, সেই দিনেই তাদের ফিঙ্গার করিয়ে দিই। এতে তাদের সাথে ১ হাজার ৫০০শ  টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার ৫০০শত টাকা পর্যন্ত চুক্তি করি। তা না হলে পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিরা পরপর কয়েকদিন ঘুরে যখন পারে না।  তখন আবার আমাদের (দালালদের) কাছেই আসতে হয়। পাসপোর্ট অফিসের সামনে চা পানের দোকানদার বলেন, এই পাসপোর্ট অফিসে বর্তমানে এখানকার স্থানীয় দালালদের দৌরাত্বের চেয়ে অফিসের মাধ্যমে দুরের দালালরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় বসে পাসপোর্ট ধারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গুনে নিচ্ছেন। তারা আরো বলেন স্থানীয় দালালরা মাঝেমধ্যেই  ঝুঁকিতে থাকে। বর্তমানে কয়েকদিন পর পরই অভিযান হচ্ছে। কিন্তু অফিসের মাধ্যমে যেসব দালাল রয়েছে তারা কোন ঝুকির  মধ্যে থাকে না। তারা শুধু মোবাইলের মাধ্যমে সমন্বয় করে যান। যিনি পাসপোর্ট করবেন তার সাথে সমন্বয় করে দেন পাসপোর্টধারীকে। এতে তথ্য ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ নাই। এছাড়াও কোথাও কোন ধরনের দৌড়াদৌড়ি করতে হয়না পাসপোর্টধারীদের। মির্জাপুর থেকে পাসপোর্ট করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, তার সাথে ১০ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছিল। শুধু একদিন এসে ফিঙ্গার দিয়ে গেছে। এক মাস পরে এসে পাসপোর্ট নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি শুধু তার মোবাইল নম্বরে এবং সেই মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে ভোটার আইডি কার্ড ছবি, বাবা মার ভোটার আইডি ও ছবি কার্ড দিয়েছিলাম। বাকি সব তারা করে দিয়েছে। সখীপুর থেকে পাসপোর্ট করতে আসা ওসমান আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আরমান আলী ও তার বড় ভাই আকরাম আলী বলেন, সখিপুরের বড়চওনা গ্রামের আনোয়ার হোসেন সব মিলে প্রায় ৯ হাজার টাকা নিবেন পাসপোর্ট করে দিতে। পাসপোর্ট অফিসে এসে ঘোরাঘুরি সহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্থানীয় দালাল ধরে পাসপোর্ট করে নিচ্ছি। তিনি জানান পাসপোর্ট করতে এসে নানা ধরনের কাগজ পত্রের  হয়রানি হতে না হয়, তাই স্থানীয় দালালের সাথে চুক্তি করে নিয়েছি। যাতে  কোন ধরনের ঘোরাঘুরি করতে না হয়। শুধু একদিন পাসপোর্ট অফিসে এসে ফিংগার দিয়ে গেলাম। তিনি আরো বলেন স্থানীয় দালাল আনোয়ার হোসেন পাসপোর্ট অফিসে আসেনি।  তিনি অফিসের লোকের সাথে কথা বলে দিয়েছে। যার সাথে কথা বলে দিয়েছেন তার কাছে এসে আমাদের কাজ হয়েছে। তবে পাসপোর্ট অফিসে কার সাথে কথা বলে দিয়েছেন সে কথা বলতে চাননি। একইভাবে ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের কামার চালা গ্রামের  রিয়াজ উদ্দিন বলেন আমি কোনদিন পাসপোর্ট অফিসে আসিনি। আজ ছেলের জন্য এই পাসপোর্ট অফিসে এসেছি। পাসপোর্ট অফিসেরই এক কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে ৮ হাজার টাকার মাধ্যমে তিনি তার ছেলের জন্য পাসপোর্ট করার চুক্তি করেন। কিন্তু তিনি পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তার নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা নুরুল ইসলামের ছেলে ইরান বলেন, আমি পাসপোর্টের আবেদন ফরম জমা দিতে গিয়ে ফেরত এসেছি। সেখানে আমার কাছে শিক্ষার্থীর প্রত্যয়ন পত্র চায়। আমি বলেছি আমি এখন পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছি। তাহলে কোথায় থেকে আমি আইডি কার্ড আনবো। আমি আরো বলেছি আমার কাছে সার্টিফিকেট আছে সেটি দেখেন। তারা বলেন শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড লাগবে। এত করে আমি ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্লা গ্রামের সানি বলেন নিজেই ব্যাংক ড্রাফ থেকে শুরু করে আবেদন করেছেন। আবেদন ফরম জমা দিতে এলে, তারা তা ফেরত দিয়েছে। পাসপোর্ট অফিস থেকে বলা হয়েছে আমি কি কাজ করি। সেই কাজের জন্য একটি প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। এরপর পাসপোর্ট অফিস থেকে বাহির হলে কিছু ওৎ পেতে থাকা দালালরা আমাকে সাহায্যের কথা বলেন। বিনিময়ে ২ হাজার ৫০০শত টাকা চেয়েছে। তাহলে আমার কাজের উপর প্রত্যয়ন পত্র লাগবে না। কথাগুলো বলতে না বলতেই উপস্থিত হন বিপ্লব নামে এক দালাল। তিনি বলেন আমার কাছে কাজটি দেন। আমি চট করে কাজটি করে দিবো। কারণ আমার একটি পরিচয় আছে। আমি একজন সাংবাদিক ক্রাইম রিপোর্টার। তিনি বলেন আমার সাথে উপ-পরিচালক থেকে শুরু করে আবেদন পত্র যিনি জমা নেন তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। কাজে আমি আপনাদের কাজটি করে দিতে পারবো। টাঙ্গাইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহায়ক মাইনুল কবির বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে সেটি আদৌ সত্য নয়। সাধারণ গ্রন্থাগারের সহ-সভাপতি খন্দকার নাজিম উদ্দিন জানান, পাসপোর্ট অফিসে দালাল রোধে মাঝে মধ্যেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিছুদিন পরপরই পাসপোর্ট অফিসের সামনে দালাল রোধে প্রশাসনের লোকজন এসে কিছু দালাল ধরে নিয়ে যায়। আবার কিছুদিন যাওয়ার পরে আগের মতই ওরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা নেয়। তবে অফিসের লোক ভালো হলে, দালাল মুক্ত এমনিতেই হয়ে যাবে। তবে তিনি আরো মনে করেন পাসপোর্ট অফিসের সকল ধরনের দুর্নীতি বন্ধের ক্ষেত্রে অফিসের লোকদের সদিচ্ছাটাই যথেষ্ট। টাঙ্গাইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ- পরিচালকের দায়ত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক জেবুন্নাহার পারভীন জানান, অফিসে লোকবল কম থাকলেও পাসপোর্টধারীদের সেবা দিতে সচেষ্টায় রয়েছি। তবে তিনি মনে করেন পাসপোর্ট অফিসে বেশির ভাগ মানুষ পাসপোর্ট করতে তদের আবেদনে তথ্য গোপন রাখেন। এতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তিনি আরো বলেন গত কয়েক মাসে পাসপোর্ট আবেদনের জন্য বেশ কিছু চাপ ছিল। প্রতিদিন প্রায় ৫০০শ আবেদন পড়তো। এখন বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ শত আবেদন হচ্ছ। তিনি আরো বলেন পাসপোর্ট অফিসের বিষয়ে যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও আমার অফিসে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদেরকে আমি বদলি করে দিতাম। কিন্তু আমার হাতে বদলির সেই ক্ষমতা নেই। টাঙ্গাইলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে টাকার বিনিময়ে গোপন সংকেত ছাড়া ভোগান্তি মুক্ত পাসপোর্ট সেবা পেতে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
  • Design & Developed by: BD IT HOST