জুলহাস উদ্দীন, তেঁতুলিয়া পঞ্চগড় প্রতিনিধি
তেঁতুলিয়া বোয়ালমারি এলাকায় ভিটাবাড়ির গাছ কেটে চুরির চেষ্টায় মডেল থানায় ভুক্তভোগীর মামলা দায়ির।
তেঁতুলিয়ায় বাড়ির সদস্যদের অনুপস্থিতে ভিটেবাড়ির ৯ টি গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। কাটা গাছগুলো নিয়ে পালানোর সময় বাড়ির মালিক টের পেলে কাটা গাছগুলো রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে উপজেলার বোয়ালমারি এলাকার জাহের আলীর ছেলে ফজর আলী ২০১৬ সালে ওই এলাকার শহীদুল ইসলামের কাছে এসএ ১৫৬ ও ১৫১ খতিয়ানের ২১০৩ ও ২১০৭ দাগে অবস্থিত বাড়ি, গাছপালা সহ ২০ শতক জমি কিনে নেন। বিক্রেতা শহীদুল ইসলাম ওই খতিয়ানে তার স্ত্রী শান্তি বেগম ও তার নিজের নামে ৪০ শতক জমি কিনে ২০১০ সালে বাড়ি করে বসবাস শুরু করে। পরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হলে শান্তি বেগম স্বামীকে ডিভোর্স দেন। ডিভোর্সের পর শান্তি বেগমের লিখিত সম্মতিতে শহীদুলের মালিকানা অংশের ২০ শতক জমি বিক্রি করেন।স্থানীয় লোকজনের উপস্তিতে ফজর আলী ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা দিয়ে গাছপালা, ও বাড়ি ক্রয় করেন শহীদুল ইসলাম কাছ থেকে। ক্রেতা ফজর আলী ওই জমি কেনার পরেই ওই বাড়িতে জৈব সারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন । দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করার পরে এবছর শুরুর দিকে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাড়িটি খালি পড়ে থাকে। এই সুযোগে শান্তি বেগম ওই বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়িটি নিজের বলে দাবি করতে থাকেন। তিনি ওই বাড়িতে বসবাসও শুরু করেন। নিজেকে ওই বাড়ির মালিক দাবি করার পর অনেক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ নিয়ে বাড়িতে বসা হয়। কিন্তু তাদের কথা অমান্ন্য করে,আদালতে মামলাও করেন তিনি। আদালত থেকে ওই ইউনিয়নের ভূ’মি কর্মকর্তা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্তের ভার দেয়া হয়। দুই তদন্তেই ফজর আলীকে জমি ও বাড়ির প্রকৃত মালিক হিসেবে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ভারা করা লোকজন দিয়ে গাছ কাটা শুরু করে শান্তি বেগম। তার লোকজন ৯ টি ইউক্লিপ্টাস গাছ কেটে ফেলে। গাছগুলোর আনুমানিক মুল্য ৬০ হাজার টাকা । খবর পেয়ে ফজর আলীর মা ফাতেমা বেগম ঘটনাস্থলে ছুটে এসে গাছ কাটতে বাধা দিলে তাকে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। এসময় দুইটি ঘরের বেড়া ভাংচুর করা শুরু করলে ফাতেমা বেগম চিৎকার শুরু করেন। পরে ফজর আলী সহ স্থানীয়রা ছুটে আসে। এসময় ভ্যানে করে গাছ গুলো নিয়ে যাবার চেষ্টা করলে গাছ গুলোকে আটক করে রাখা হয়। এ ঘটনায় ফজর আলী বাদী হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
শান্তির স্বামী শহিদুল ইসলাম জানান, আমার দু’জনের ক্রয় কৃত জমি ২০শতক লিখে নেওয়ার পর আমাকে ডিভোর্স দেয়, ডিভোর্সের পর আমি সেখান থেকে চলে আছি। আমার অংশের জমিটি ফজর আলীর কাছে বিক্রি করে রেজেষ্ট্রি করে দিয়েছি।
স্থানীয় জয়নাল আবেদীন জানান,বোয়ালমারি এলাকার সবাই জানে শহিদুল তার অংশের জমি ফজরের কাছে বিক্রি করেছে। এখানে শান্তির কি আসে যায় সেতো নিজে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছে। শান্তির অংশ তাকে দিয়ে দিয়েছে।
শান্তি বেগম জানান,আমরা স্বামী /স্ত্রী দু’জনে মিলে ঘর বাড়ি,মাটি ভরাট করেছি আমি আমার বাড়িটি সহ বাড়ির ভিটার জমি ফেরৎ চায়।আমি আমার সন্তানদের নিয়ে সেখানে বসবাস করতে চায়।
তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।