তুষার কবিরাজ ডুমুরিয়া খুলনার প্রতিনিধি
ডুমুরিয়া উপজেলার কুলটি গ্রামে দাদুর বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ৯ বছর বয়সের নাতনিকে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষক দাদু দিব্যেন্দু ফৌজদার(৬০)এখন জেলহাজতে রয়েছেন। ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,প্রায় ৭/৮ বছর আগে ভুক্তভোগীর বাবা কার্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান এবং তার কিছুদিন পরে মা অনত্র বিয়ে করে সংসার করছে। ভুক্তভোগী দুই বোনের মধ্যে ছোট এবং বড় বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। যে কারণে ভুক্তভোগী দাদুর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতো। এক পর্যায়ে এসে দাদুর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে নাতনির উপর। তারই ধারাবাহিকতায় ধর্ষক দাদু দিব্যেন্দু প্রায় গভীর রাতে নাতনির রুমে ঢুকে তাকে ধর্ষন করতো। নাতনি বাধা দিলে তাকে মেরে ফেলানোর ভয়ভীতি দেখাতো এবং কাউকে বিষয়টি না বলার জন্য শাসাতো। ভুক্তভোগী ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারতো না। কিছুদিন পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য তাপস ফৌজদারের মেয়ের বিয়ের সুবাদে ভুক্তভোগীর বোন বেড়াতে আসলে ভুক্তভোগী তার বোনকে বলে যে, দিব্যেন্দু দাদু তাকে সব সময় উত্যক্ত করে। কিন্তু তখনও ভুক্তভোগী ধর্ষনের বিষয়টি ভয়ে গোপন করে যায়। পরের দিন ভুক্তভোগীকে নিয়ে তার বোন নিজের বাড়িতে চলে যায়। যাওয়ার সময় উত্যক্তের বিষটি জ্যাঠীমাকে জানিয়ে যায়। কিছুদিন পরে ভুক্তভোগী পেটে ব্যথায় প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সে তার বোনকে দাদু দিব্যেন্দু কতৃক একাধিক বার ধর্ষনের বিষয়টি খুলে বলে। তারপর থেকে একে একে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং রীতিমতো চারিদিকে গুঞ্জন শুরু হয়। গত ইং ১লা সেপ্টেম্বর শুক্রবার খুব্ধ এলাকাবাসী ধর্ষক দিব্যেন্দু ফৌজদার কে আটক করে ডুমুরিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করেন এবং ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে থানা চত্বরে মিছিল করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর বোন ঝর্ণা বলেন,আমার বোন হঠাৎ পেটে ব্যথায় প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সে আমাকে ধর্ষনের বিষয়টি বলে। আমি বিষয়টি আমার দাদু কুলটি গ্রামের মেম্বার তাপস ফৌজদারকে মোবাইল ফোনে জানাই এবং পরামর্শ চাই। তখন তিনি (মেম্বার তাপস) আমাকে আইন আদালত করতে নিষেধ করেন এবং বিষয়টি তিনি নিজে দেখবেন বলে আশাস্ত করেন কিন্তু ১সপ্তাহ হয়ে গেলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। পরে এলাকাবাসী ধর্ষক দিব্যেন্দু কে ধরে পুলিশে দিয়েছে এবং দিব্যেন্দু তার অপকর্মের কথা থানায় স্বীকার করেছে। আমি এর বিচার চাই। মামলার বাদী স্থানীয় ইউপি মহিলা সদস্য (সংরক্ষিত) অর্চনা ফৌজদার বলেন, আমি জানা মাত্র সমাধান করার চেষ্টা করেছি। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ধর্ষক দিব্যেন্দু কে ধরে থানায় দিয়েছি এবং দিব্যেন্দু তার কুকর্মের কথা থানার স্বীকার করেছে। মেয়েটির(ভুক্তভোগী) কেউ না থাকায় আমি নিজে বাদি হয়ে মামলা করেছি। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য তাপস ফৌজদার বলেন, ভুক্তভোগীর বোন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে যে আমাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানানোর পরেও আমি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। উক্ত অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যা। ভুক্তভোগীর পরিবার বা তার বোন আমাকে উক্ত বিষয়ে কোন কিছু জানায়নি। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। উক্ত বিষয়ে ডুমুরিয়া থানার মামলার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা এস আই সঞ্জীব বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছাই এবং আসামী দিব্যেন্দুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে গত ১লা সেপ্টেম্বর একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ০৩। অধিকতর তদন্তের সার্থে এ বিষয়ে আর কোন কথা বলতে তিনি রাজি হননি।