বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষদের অভিযোগে উঠে এসেছে দ্রব্যমূল্য অনিয়ন্ত্রণের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মহলের সচেতন ব্যক্তিরা গণমাধ্যমকে সাধারণ মানুষের অভাব অনটনে জীবন বিপন্নের জায়গায় দাঁড়িয়ে বলেছেন দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি আর ক্ষুধা দারিদ্রতার শেষ কোথায়। সুশীল সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা আরো অভিযোগ করে বলেছেন
পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের জুলুম অত্যাচারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল দ্রব্যমূল্যের কষাঘাত সাধারণ মানুষ খেয়ে থাকুক আর না খেয়ে থাকুক তা নিয়ে কোন ভ্রুক্ষেপে ছিল না তৎকালীন সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তাদের।
অপরদিকে তার দলীয় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নানান অজুহাতে প্রতিনিয়ত দগ-দগে আগুন ঢেলে দিতো প্রতিটি নিত্য পণ্যের গায়ে।
সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা গরীব মেহনতী মানুষদের জীবন যাতাকলে পিষ্ঠ করে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। তবে গত বছর পাঁচ আগস্ট এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ও তার বেশ কিছু দোষরদের দেশ থেকে তাড়িয়ে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করলে দেশের সর্বস্তরের মানুষ নতুন সম্ভাবনার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে পেলেও ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সাধারণ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা খুব সীমিত সময়ের মধ্যে পন্ড হয়ে গেছে।
কারণ পতীত হাসিনা সরকার পতন হলেও সক্রিয় সকল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, তারা নিজ অবস্থানে বহাল তবিয়তে থেকে পূর্বের তুলনায় সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রক সকল সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আরো কঠোরভাবে দ্রব্যমূল্যর বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে বর্তমান কোন জিনিসের দাম সাধারণ মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যে নাই।
সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের ।
যদিও শীতের মৌসুম জুড়ে তরি তরকারির দাম একেবারে সস্তায় পাওয়া গেলেও চাল, ডাল, তেল, মসলা, আটা-ময়দা, চিনি, বেকারী সামগ্রী এমনকি জীবন বাঁচানোর অতি প্রয়োজনীয় ঔষধের দাম বেড়েছে ৩শ গুণ, এতেও গাত্রদাহ নাই বর্তমান দেশের অতি গুরু দায়িত্ব বহনকারী সরকার মহলের। সাথে দেশের বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আখের গোছানোর জন্য এবং অতি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আদায় করে ক্ষমতার মসনদ দখলের লক্ষে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কোন নেতাদের মুখে নেই সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা বাচার বিষয় নিয়ে, অথচ দেশের সাধারণ জনগণই ক্ষমতার ম্যান্ডেট দিয়ে যেকোনো দলকে ক্ষমতায় বসানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অথচ তারাই আজ না খেয়ে অর্ধ আহারে এবং অর্থ অভাবে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত করতে হচ্ছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল উপদেষ্টাগণ দেশের প্রশাসন ব্যবহার করে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার পাঁয়তারা করছে।
আর তারই প্রেক্ষিতে জনগণ তথা নানান শ্রেণী পেশার মানুষেরা রাজপথে নেমে আন্দোলন করছে, অগ্নিকাণ্ড ঘটাচ্ছে, গাড়ি ভাঙছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করছে। আর একশ্রেণীর মানুষ পেটের দায়ে হাহাকার করছে।
একই সাথে আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আরো একধাপ দ্রব্যমূল্যর বৃদ্ধির নীল নকশার পাঁয়তারায় মেতে উঠেছে।
অথচ সাধারণ মানুষদের আয় উপার্জন যেমন ছিল তেমনই আছে খরচ বেড়েছে চতুর্গুণ সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন বছরে মাত্র ১ মাস ১১ দিনের ব্যবধানে এলপিজি বোতল জাত গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দুইবার, বৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ডাল, চিনি,আটা, ময়দা, সুজি, মসলা সামগ্রী সহ সকল পণ্যের বেড়েছে শিক্ষা খাতের সকল উপকরণের। অথচ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করলেও তার কোন সুফল আসছে না ভোক্তা পর্যায়ে।
প্রতিনিয়ত যেন লাগামছাড়া পাগলা ঘোরার মত ছুটছে নিত্য পণ্যের দাম। এদিকে সকল ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট দের লাগামটানতে ব্যর্থ সরকার মহল। অন্যদিকে দেশের সাধারণ জনগণের প্রত্যাশার প্রাপ্তি নিয়ে মুখাপেক্ষী সরকারের দিকে। এক্ষেত্রে চোরে না শুনছে ধর্মের কাহিনী অপ্রত্যাশিত হারে বাড়ছে প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য চোখে মুখে অগ্নি ঝরছে সাধারণ মানুষের তাই দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সরকার মহলের মধ্যে দ্বিধা বিভক্তির কারণে বিরূপ প্রভাব জাপটে বসেছে দেশজুড়ে।
আরো প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের এই অশান্তির দাবানল থেকে আমরা কবে মুক্তি পাবো, কবে পরিত্রাণ পাব অভাব অনটন ক্ষুধা দারিদ্রতা থেকে। তবে আর এক শ্রেণীর মানুষের কথা প্রত্যাশার প্রাপ্তির জায়গা খুবই স্পর্শকাতর কারণ দেশ স্বাধীনের পর থেকে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদের আখের গোছানোর জন্য ব্যতিব্যস্ত থেকেছে তারা সাধারণ মানুষের কথা কখনো বিন্দু পরিমানে চিন্তাধারায় এনে ভেবে দেখেনি। অথচ সাধারণ জনগণই তাদের সামান্য মৌলিক প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলকে ম্যান্ডেড দিয়ে ক্ষমতায় বসালেও প্রত্যাশার জায়গা থেকে গেছে শূন্য।