মোঃ আব্দুল আজিজ বিশেষ প্রতিনিধি নওগাঁ
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চকগৌরি এলাকায় পাতনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয় অ্যারোমা ইয়ুথ ওমেন অর্গানাইজেশনের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। মানবিক কার্যক্রম, সৃজনশীল প্রতিযোগিতা ও নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ এই আয়োজনকে উৎসবমুখর করে তোলে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শাবানা ইয়াসমিন এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মৌসুমি আক্তার (সুমি)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ভীমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী রাম প্রসাদ ভদ্র, মহাদেবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আশেকুর রহমান এবং নওগাঁ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাবেদ ইকবাল প্রমুখ।
অতিথিরা তাদের বক্তব্যে অ্যারোমা ইয়ুথ ওমেন অর্গানাইজেশনের মানবিক ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় জানানো হয়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় ৩০০ নারী উদ্যোক্তা অংশ নেন, যারা নিজেদের উদ্যোগ ও সাফল্যের গল্প শেয়ার করেন।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “এ ধরনের সংগঠন শুধু সমাজ উন্নয়নের নয়, বরং মানবসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। যুব ও নারীদের এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে বলে আমি আশাবাদী।”
সকালে খেলাধুলার আয়োজন দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। নারীদের জন্য কপালে টিপ পড়ানো প্রতিযোগিতা এবং পুকুর পাড়ি দিয়ে সাঁতার প্রতিযোগিতা ছিল অত্যন্ত আকর্ষণীয়। শিশুদের জন্য বেলুন ফোলানো প্রতিযোগিতাও তাদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়। প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথির দুপুরে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
পরে শুরু হয় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম। প্রধান অতিথি নিজ হাতে ২০০ জন শীতার্ত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ কার্যক্রমের শুভ সূচনা করেন। এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, “শীতের তীব্রতায় দরিদ্রদের জন্য কম্বল বিতরণ অত্যন্ত মহৎ উদ্যোগ। অ্যারোমা ইয়ুথ ওমেন অর্গানাইজেশন মানবিকতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছে।”
সভাপতি শাবানা ইয়াসমিন বলেন, “আমাদের সংগঠনের মূল লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের উন্নয়ন। আজকের এই আয়োজন আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ভিত্তি স্থাপন করেছে।”
সাধারণ সম্পাদক মৌসুমি আক্তার (সুমি) জানান, “আমরা চাই যুবসমাজ ও নারীদের স্বেচ্ছাসেবী কাজে উৎসাহিত করতে। আমাদের এই কার্যক্রম সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
এই আয়োজন শুধু আনন্দই ছড়ায়নি, বরং মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, দরিদ্রদের সহায়তা এবং সৃজনশীল আয়োজনের মাধ্যমে অ্যারোমা ইয়ুথ ওমেন অর্গানাইজেশন প্রমাণ করেছে যে, মানবিকতা ও সৃজনশীলতার সমন্বয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।