মোঃ রিপন রেজা স্টাফ রিপোর্টারঃ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।শনিবার ভোরে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে।নিহতের নাম অনিকা আক্তার অনিকা(১৯),বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম,বাড়ি মাদারীপুর জেলায়।তার পরিবার এ ঘটনাকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে।খবর পেয়ে পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।এ ঘটনায় অনিকার স্বামী হাবিবুর রহমান(২৫)কে আটক করেছে পুলিশ।নিহত অনিকার বাবা জানায়-৫ বছর পূর্বে অনিকা এবং হাবিবুর রহমান দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন।তবে বিয়ের কিছুদিন পর জানা যায়,হাবিবুর রহমান অনিকাকে বিয়ে করার আগে আরো ৪টি বিয়ে করেছিলো।সংসারে সামান্য ঝগড়া হলেই নাকি তিনি আবার বিয়ে করতেন।৪ মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে।অনিকা সেই সন্তানকে নিয়েই বিভিন্ন বাউল ক্লাবে গান গেয়ে সংসার চালাতেন।তিনি আরো জানান-সম্প্রতি হাবিবুর রহমান মালা নামে আরেকজন বাউল শিল্পীকে বিয়ে করেছেন।এই বিষয়টি অনিকা জানার চেষ্টা করলে হাবিবুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর চলে যান।সেখান থেকে কয়েকদিন আগে তিনি অনিকাকে তালাকের নোটিশ পাঠায়।নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম আরো জানান-নোটিশ নিয়ে অনিকা এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করলে হাবিবুর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্ণা নামের আরেক বাউল শিল্পীকে দিয়ে হাবিবুর অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করান।গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বর্ণা অনিকার বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং অনিকার পরিহিত স্বর্ণের অলংকার খুলে নেয়।নিহতের পরিবারের দাবি,হাবিবুর পরিকল্পিতভাবে অনিকাকে হত্যা করে তা ধামাচাপা দিতে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যান।তারা এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।তবে আটক স্বামী হাবিবুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন,তিনি অনিকাকে হত্যা করেননি।গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে ফিরে এসে তিনি ভুইগড়ের ভাড়া বাসায় যান।সেখানে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন,অনিকার নিথরদেহ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে।তিনি আরো দাবি করেন,অনিকাকে যে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন,সেটি ভুয়া এবং অনিকাকে ভয় দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল।ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)শরিফুল ইসলাম বলেন-বাউল শিল্পী অনিকার লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।তবে নিহতের পরিবারের দাবি-তার স্বামী হাবিবুর রহমান পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে।এজন্য জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য স্বামী হাবিবুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।