মোঃ রইস উদ্দিন রিপন স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পার্টির চলছে আসন ভাগাভাগির কষাকষি।জাতীয় পার্টির এই ভাগাভাগিতে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া অনেক এমপি-মন্ত্রীর।লোকমুখে একটি কথা প্রচলিত ছিল আওয়ামী লীগ হতে নৌকার মনোনয়ন পেলেই এমপি।এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লোকমুখের কথাটা এখন বিপরীত। তেমন একটা খাটছে না আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার মনোনয়ন পাওয়া প্রায় ৭০ জন প্রার্থীকে আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে।আসন ভাগাভাগি নিয়ে এরই মধ্যে জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য দলের সঙ্গে চলছে হিসাব-নিকাশ।আসছে আগামী ১৭ ই ডিসেম্বর(রবিবার)এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার অনেক প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হতে পারে।আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়া কিছু কিছু প্রার্থী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডামি প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ভরাডুবি হতে পারে তাদেরকেও বাছাই করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে পারে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া অনেক প্রার্থীই বিষয়টি জানেন এবং খোঁজখবর নিচ্ছেন।বাংলাদেশ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নৌকা হতে বঞ্চিত হয়েছেন ৬৯ জন সংসদ সদস্য।এবার বাংলাদেশ জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমন নৌকা মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭০জনের কপালে অঘটন পারে।আওয়ামী লীগের দলীয় কৌশলগত কারণে ছাড় পেতে পারেন ১৪ দলীয় জোট,জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি সহ ইসলামি পার্টিগুলো।তবে আওয়ামী লীগ বিচার-বিশ্লেষণ ও দলীয় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সকল পার্টিদেরকে বেশকিছু আসন ছাড় দিবেন।আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র হতে জানাযায়-বাংলাদেশ জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনয়ন পাওয়া প্রায় ৭০ জন প্রার্থীকে দলীয় সুবিধার কারণে সরে যেতে হতে পারে।হিসাব নিকাশে ১৪ দলীয় জোট ৮ টি আাসন এবং জাতীয় পার্টির প্রয়োজন ৩০-৩৫টি আসন।এই হিসাব নিকাশের সমীকরণ মিলাতে দফায় দফায় চলছে বৈঠক।শোনা যাচ্ছে তৃণমূল বিএনপি এবং কয়েকটি ইসলামী পার্টিকে আসন ছাড় দিবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলে প্রায় অনেক আসন হতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হবেন।এবার আসন বন্টনের কাজটি আওয়ামীলীগ অনেক গোপনীয়তার সাথে করছেন।আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠক হয়েছে কিন্তু,আসন বণ্টন কিভাবে হবে তা এখনো সুস্পষ্ট করেননি।দলের জোট সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন- জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতার পর আসন ভাগাভাগি করে চূড়ান্ত করা হবে।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির মধ্যে বৈঠক নিয়ে চলছে অনেক লুকোচুরি খেলা।কোথায় দুই দল বৈঠক করবেন তা সুস্পষ্ট করেননি এখনো।১৪ দলের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন-দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করতে তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা হয়েছে।অন্য কোন ব্যাপারে কোন কথাবার্তা হয়নি।৯টি ইসলামী দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করলে প্রধানমন্ত্রী সকল দলকে নির্বাচনে আসার আগ্রহের কথা বলেন।দলগুলো হচ্ছে-ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশ,বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট,বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন,বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি,বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট,আশেকানে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।এসব দলের ১৪ জন শীর্ষ নেতা বৈঠকে অংশ গ্রহন করেন।এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-আতাউল্লাহ হাফেজী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহাম্মদ ,মিসবাহুর রহমান চৌধূরী,আবুল হাসনাত আমীনি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ,সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী,আবুল খায়ের এবং শাহীনূর পাশা চৌধুরী আলম নূরী।এরা অনেকেই নিজেদের সংসদ সদস্য হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সহায়তা চেয়েছেন।জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পক্ষে ইসলামি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।এমন সংবাদের পরিপেক্ষিতে সামনে কিছু প্রশ্ন আসতে পারে নারায়ণগঞ্জবাসীদের মনে।তবে নারায়ণগঞ্জ ১ আসন হতে ৫ আসন পর্যন্ত এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কি ঘটতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বাসীদের?নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ)আসন বর্তমান কর্তৃত্ব আওয়ামী লীগের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর(বীর বিক্রম),এই আসনটি চাচ্ছে বিএনপি তৃণমূল অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার।নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার)আসনে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু,এই আসনটিতে ভাগ বসাতে চাচ্ছে জাতীয় পার্টির আলমগীর শিকদার লোটন।নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও)আসনটি রয়েছে জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা,কিন্তু এই আসনটিতে মনোনয়ন পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত।নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ)আসনে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এ কে এম শামীম ওসমান,এই আসনে বিপরীত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও তেমন জোরালো নয়।নারায়ণগঞ্জ-৫(বন্দর-সদর)আসনে জাতীয় পার্টির এমপি একেএম সেলিম ওসমান এখনে বহাল থাকবেন(যদি আওয়ামী লীগ থেকে কোন সিদ্ধান্ত না আসে)।দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) এবং নারায়ণগঞ্জ-৪(বন্দর-সদর)আসনে রয়েছে জাতীয় পার্টির এমপি।তথ্য সূএে জানা যায়- নারায়ণগঞ্জ ৪টি আসনে অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ- ৫(বন্দর-সদর)আসন ব্যতীত নৌকার প্রতিপক্ষ রয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী।এই চারটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে হেভিওয়েট হিসেবে দেখা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার)আসন বর্তমান ক্ষমতাসীন এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর প্রতিপক্ষ আলমগীর শিকদার লোটন।অপরদিকে,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা থেকে মনোনয়ন পাওয়া আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের প্রতিপক্ষ,জাতীয় পার্টি হতে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাকে।তবে,নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) এবং নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ)এই দুটি আসনে,কি ঘটতে পারে রাজনৈতিক সমীকরণে তা এখন দেখার বিষয়।এদিকে জনমত জরিপে নারায়ণগঞ্জ২(আড়াই হাজার)আসনে ক্ষমতাসীন দলীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ভোটের মাঠে অনেক এগিয়ে রয়েছেন।অপরদিকে,নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও)আসনে জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ভোটের মাঠে অনেক এগিয়ে রয়েছেন।সোনারগাঁয়ের জনগণ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতিতে যদি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ এবং সুন্দর হয় তাহলে এমপি-আব্দুল্লাহ আল কায়সারের নিকট বিপুল ভোটে পরাজিত হবেন জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।এখন নারায়ণগঞ্জ বাসি প্রতীক্ষায় রয়েছেন আগামী ১৭ ই ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ দিনের জন্যে।