মশিউর মিলন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ। অনুষ্ঠানের পরিচয় পর্বের সময় তার সাবেক এপিএস আনিচুর রহমানকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় করিয়ে না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চ ত্যাগ করেন সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৭মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, গত বছর উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন। বিষয়টি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে তাকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করেন জেলা আওয়ামী লীগ। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে বহিষ্কার করেননি। তবে জেলা আওয়ামী লীগ বহিষ্কারের সুপারিশ পাঠানোর পর থেকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিজের সাবেক এপিএস আনিচুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন সংসদ সদস্য পন্থী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের সভাপতি ও এমপি (আসম ফিরোজ) মহোদয় যে কাজটা করেছেন এতে তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মন ভেঙেছেন তিনি। আসম ফিরোজ সাহেব ছোট হোক এটা আমি এখনো চাইনা।’
বিষয়টি জানতে সংসদ সদস্য আসম ফিরোজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমার জরুরী কাজ ছিলো এবং শরীর ভালো না, তাই আমি চলে এসেছি।’ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সে (আবদুল মোতালেব) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক না। জেলা এবং কেন্দ্র থেকে সে এক্সপেল্ট। এটা আমাদের বিষয় না। সে গায়ের জোরে সাধারণ সম্পাদক থাকতে চাচ্ছে, এখন আপনারা যদি তাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে রাখতে চান রাখেন, অসুবিধার কি আছে! বিস্তারিত জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, আমরা আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আমাদেরকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
উল্লেখ্য, বাউফলে আওয়ামী লীগের তিন গ্রুপ রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে। পৃথকভাবে তিনটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার।