আমিরুল ইসলাম পঞ্চগড়ঃ
স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে অনেক বড় হয়ে পরিবারের দুঃখ ঘুচাবে কিন্তু নির্মম পরিহাস, বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর দিন গুনতে হচ্ছে ১০ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী নাসরিন বেবিকে। যে চোখে ছিল স্বপ্ন সে চোখে আজ অন্ধকার। বিছানায় শুয়ে শুয়ে নাসরিনের চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে বিছানায়, কথা বলার শক্তি যেন হারিয়ে যাচ্ছে, তারপর ও নাসরিন বাঁচতে চায়। আবার সুস্থ হয়ে স্কুলে যেতে চায়। পাশের টেবিলে রাখা বই গুলো বার বার ধরতে চায় কিন্তু তার তো কোন শক্তি নেই।
টাকার অভাবে ঘরের বিছানায় শীর্ন দেহটি নিয়ে পড়ে আছে ১৫ বছরের নাছরিন বেবি। নিজ শক্তিতে হাত-পা নাড়তে পারে না। পাশে বসে মেয়েকে সুস্থ করে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে চলেছেন মা রুমানা বেগম।
নাছরিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাতকুঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী।
টাকার অভাবে ঘরের বিছানায় শীর্ন দেহটি নিয়ে পড়ে আছে ১৫ বছরের নাছরিন বেবি। নিজ শক্তিতে হাত-পা নাড়তে পারে না। পাশে বসে মেয়েকে সুস্থ করে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে চলেছেন মা রুমানা বেগম। পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৪নং কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের
খাগুরু পাড়া এলাকার বশিরুল ইসলামের মেয়ে। এ মেধাবী ছাত্রী কয়েক মাস ধরে মেরুদন্ড বাঁকা রোগে আক্রান্ত।
জানা যায়, দিনমুজুর বাবার তিন মেয়ের মধ্যে বড় নাছরিন বেবি হঠাৎ করে মেরুদন্ডে ব্যথা নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতে ভর্তি হলে সেখানকার ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর তাকে বাংলাদেশ স্পাইন এন্ড অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অর্থোপেডিক এন্ড স্পাইন সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শাহ্ আলম বলেছেন, তার মেরুদন্ড বাঁকা রোগটি দ্রুত চিকিৎসা নিলে সে সুস্থ্য হয়ে উঠবে।
নাছরিন বেবির অপারেশনের খরচ সাত লাখ ও পরবর্তী চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন মোট দশ লাখ টাকার। তার দিনমুজুর পিতার পক্ষে এ টাকা যোগাড় করে মেয়ের চিকিৎসা করা আদৌও সম্ভব নয়। তাই তার বাবা সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ডাক্তার আমাদের বলেছে ১৫ দিনের মধ্যেই তার অপারেশন করতে হবে। এত টাকা আমি কোথায় পাবো? আমিতো দিনে আনে দিনে খাই। সবাই যদি সাহায্য সহযোগীতা করে তাহলে আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে পারবো।
হতদরিদ্র মেধাবী ছাত্রী নাছরিন বেবি আজ বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। তিনি বলেন, আমরা তিন বোন, আমার কোন ভাই নাই, ইচ্ছা ছিলো পড়ালেখা করে বড় হয়ে আমার পরিবারের দেখাশোনা করবে। কিন্তু হঠাৎ করে আমার সব স্বপ্ন শেষ হলো। এখন সমাজের সকল স্তরের মানুষ যদি এগিয়ে আসে তাহলে হয়তো আমি সুস্থ হয়ে আবারও স্কুলে গিয়ে পড়ালেখা করতে পারবো।
কামাতকুঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফি উদ্দীন বলেন, নাছরিন বেবি ১০ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী। সে নিয়মিত স্কুলে আসতো। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে গেছিলো কিন্তু অর্থের অভাবে তাকে চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়িতে নিয়ে আসছে।
কামাতকুঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি রহমতুল্লাহ রোজি বলেন, নাছরিনের বাবা দিনমুজুর। ভিটেমাটি ছাড়া তার কোন সম্পদ নাই, তার পক্ষে এতো টাকা যোগাড় করা সম্ভব না। নাছরিনকে বাঁচাতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
সিভিল সার্জন পঞ্চগড় ডাঃ মোস্তফা জামান চৌধুরী জানান, ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী নাসরিন বেবির যে শারীরিক সমস্যা এটা জন্মগত ত্রুটির কারণে স্বাভাবিক ভাবে হয়েছে। ঢাকায় দু একটি হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। তবে চিকিৎসার খরচ অনেক। নাসরিন বেবির চিকিৎসায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
মেধাবী শিক্ষার্থী নাছরিনকে বাঁচাতে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা,
মোঃ বশিরুল ইসলাম,
সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০২০০০২২২১৬০৮২, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, টুনিরহাট শাখা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।
যোগাযোগের নম্বর: ০১৭৩৫৪৩৬৫৩০