আশরাফুল ইসলাম সবুজ,পাইকগাছা।।
খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদে ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে। নদের পানি ও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গনে উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের ভেদামারি গ্রাম ও হরিঢালী ইউনিয়নে দর্গামহল গ্রাম বিলীন হতে চলেছে। ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যাওয়ায় এখানকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।গত দু’দিনে ভাঙ্গন তীব্র হওয়ায় প্রায় ১২-১৪টি ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। দর্গামহল গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বাপ-দাদার ভিটায় আমরা শত বছর ধরে বসবাস করে আসছি। কপোতাক্ষ নদে ভাঙ্গনে আমাদের সবকিছু চলে গেছে। অল্প একটু জমির ওপর একটা ঘর ছিল, তা-ও গত রাতে আকস্মিক ধ্বসে যেতে বসেছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে সারা রাত বসে থাকি। কখন না ঘরটা বিলীন হয়ে যায়। আমাদের আর জমি কেনার ক্ষমতাও নাই যে অন্যখানে জমি কিনে বসবাস করব। আমাদের পূর্বপুরুষের প্রায় ৫০-৬০ ঘরবাড়ি নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই জমি কিনে অন্যখানে বসবাস করছে আবার অনেকেই রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় বসবাস করছে। ভেদামারি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, গত দু’দিনে তার বেশ কয়েকটি ঘর বিলীন হয়েছে। এ বিষয়ে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়ার্দ্দার ও হরিঢালী ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর সিদ্দিকী রাজু বলেন, আমরা ভেদামারি ও দর্গামহল গ্রামের ভাঙ্গনের বিষয় উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বলেছি। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। পাইকগাছা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার বলেন, আমরা ভাঙ্গনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্দ এলে শুকনার সময় কাজ শুরু হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু বলেন, ভাঙ্গন বিষয়ে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সার্ভে করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি, বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করব।স্হানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ভেদামারি, মালথ, আগড়ঘাটা ও দর্গামহলের ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের। এই ভাঙ্গনের ফলে দুটি গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। সে কারণে কপোতাক্ষ নদের ওই স্থানগুলোতে ভাঙ্গন ঠেকাতে এক কিলোমিটার দূর দিয়ে বিকল্প নদী খনন করা হচ্ছে।