পুঠিয়া উপজেলা প্রতিনিধি মুন্না আলী (রাজশাহী)
রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক অসহায় পরিবারের জমি, জবরদখল এর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী চয়েন উদ্দিন নাম সহ আরো কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
আবুল কালাম পিতা, সৈয়দ আলী প্রাং গত প্রায় ৩৫ বছর আগে ২৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন ওই একই এলাকার মাবিয়া বেগম পিতা, মহির মন্ডল এর কাছে থেকে। এরপর প্রায় ৩৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন ভুক্তভোগী আবুল কালাম। হঠাৎ বেশ কিছু দিন থেকে ভুক্তভোগী আবুল কালামের ছেলে সন্তান না থাকায় মোল্লাপাড়া এলাকার প্রায় ৯ থেকে ১০ জন ব্যক্তি জমি জবরদখল করে ভোগদখল করার চেস্টা করছে। ওই ঘটনায় পুঠিয়া থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন ভুক্তভোগী আবুল কালাম।
এলাকাবাসি সুত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখাও মিলে এর সত্যতা। ১৯৮৮ সালে ২৯ দাগে আবুল কালাম ২৪ শতাংশ জমি কিনে আয়েন উদ্দিন ও কায়েম উদ্দিনের বোনের নিকট থেকে, এবং ওই জমির সনাক্তকারী হিসেবে ছিলেন ভাই আয়েন উদ্দিন নিজেই, আবার তিনিই জমি দাবি করছেন। মোল্লাপাড়া মৌজার, ৪৫ নং খতিয়ানের, ৪৩০ নং আরএস দাগের জমি নিয়ে ঝামেলা শুরু করে স্হানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। পরে ভুক্তভোগী আবুল কালামের ছেলে সন্তান বা ক্ষমতা না থাকায়, বছর খানেক আগে আবুল কালাম বাসায় না থাকায় সুযোগ বুঝে স্ত্রীসহ ৪ মেয়েকে ব্যপক ভাবে মারধর করে আবুল কালামের স্ত্রী সালেহা বেগমের বাম হাত মারাত্মক ভাবে ভেঙ্গে দেওয়াও হয়। পরে ওই বিষয়ে ৯ জনকে আসামি করে কোর্টে একটি মামলাও করেন ভুক্তভোগী পরিবার, যা এখনো চলমান। উক্ত জায়গায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিবাদীগণ জোরপূর্বক বিভিন্নভাবে ব্যবহার করছে। এছাড়াও উক্ত দাগের জমিটি প্রায় ৩৫ বছর আগে কিনেন ভুক্তভোগী আবুল কালাম সে সময় ওই জমিতে পতিত অবস্থায় ছিল।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত কায়েম উদ্দিন ও চয়ন উদ্দিন মারধরের কথা দুজনেই স্বীকার করে বলেন, আমাদের বোনের কাছ থেকে জমি কিনেছে সত্যি। তবে মোট ২৯ দাগে ২৪ শতাংশ জমি।
জমি বিক্রয়কারী মাবিয়া বেগম তিনি বলেন, বহু বছর আগে আমার কাছ থেকে জমি কিনে নিয়েছে। সেই দলিলে শনাক্তকারী আমার ভাই নিজেই। তারপর থেকে আবুল কালাম ভোগ করে আসছেন।
স্থানীয় সালিশদার শহীদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি বলেন, জমির সবকিছু ঠিকঠাক আছে গায়ের জোরে অসহায় ব্যক্তিটিকে তারা বিভিন্নভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করছে। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার তাদের নিয়ে বসা হয়েছে কিন্তু বিবাদীগণ কোন ফায়সালা মেনে নেয় না। এমনকি যে জমি জবরদখল করে খাচ্ছে অন্য জায়গার জমিও এখন পর্যন্ত বুঝিয়ে দেয় নাই। জমিটি ইতিপূর্বে পতিত অবস্থায় পড়েছিল। পরে ভুক্তভোগী আবুল কালাম অনেক কষ্ট করে গর্ত ভরাট করার পর ব্যবহার করার উপযোগী করলে জমিটির প্রতি তাদের লোভ হয়। মূলত সেই কারণেই ফায়সালা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য রফিকুল ইসলাম ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য মেম্বার আব্দুল মালেক তারা বলেন, বিবাদীগণের বোন মাবিয়া বেগমের কাছ থেকে ১৯৮৮ সালে জমি জমি কেনেন আবুল কালাম এরপর থেকে প্রায় ৩৫ বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছে। সময় ওই জমি প্রতিত হিসেবে পড়েছিল। বর্তমানে জমিটি বাজার সংলগ্ন হওয়ায়, জমিটির অংশ বিভিন্ন দাগে আবুল কালামকে দিতে চাচ্ছে। যদিও ২৯ দাগের জমির মধ্যে বোন মাবিয়ার ভাগের অধিকাংশ দাগের জমি ইতোমধ্যে বিবাদীগণ বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ফায়সালায় বসলেও ফায়সালা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পুঠিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর হাসমত আলী তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন আবুল কালাম। সে সময় ২৯ দাগে বোনের জমি কেনার পর উক্ত স্থানে সবাই বুঝিয়ে দেয়। জমিটি এখন বাজার সংলগ্ন দামী হওয়ায় বিবাদীগণ জমিটি ছাড়তে চাচ্ছেন না। এছাড়াও ভুক্তভোগী আবুল কালাম এর বাড়ি জমি থেকে একটু দূরে হওয়ায় জমিটিতে উঠতে সমস্যা হচ্ছে। আর বিবাদী গনের বাড়ি জমির কাছে হওয়ায় তারা জমিটিতে যেতে বাধা দিচ্ছে। তবে বিষয়টি যাই হোক আইন অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।