বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
প্রকৃতি হারাচ্ছে ভারসাম্য, বসন্তের আগেই শীতের বিদায়।
প্রথাগতভাবে মাঘের শীত বাঘের গায়ে চির চরিতর প্রবাদ বাক্যটি বচনে থাকলেও বাস্তবে নাই। কারণ এবছর বসন্ত আগমনের আগেই দেশের দক্ষিণাঞ্চল খুলনা থেকে বিদায় নিয়েছে শীত। মৌসুম শুরু থেকে হাড় কাঁপানো কনকনে শীত গুটিসুটি মেরে সুবিধা মতন জেঁকে বসতে পারেনি অঞ্চল জুড়ে। পৌষের শেষ মাঘের শুরুতে হাতে গোনা মাত্র কয়েকদিন শীতের অনুভূতির শরীর স্পর্শ করলেও কাতর করতে পারেনি মানব ও প্রাণীকুল। তাপমাত্রা উঠানামা করেছে সীমাবদ্ধ ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এরই মধ্যে আবার জানুয়ারির ২৫ তারিখ থেকে তাপমাত্রার পারদ উর্ধ্বমুখীর কারণে অনেকটাই গরম উপলব্ধি হচ্ছে। তবে ভোররাতে হালকা শীত অনুভূতি হওয়ার কারণে সামান্য গরম কাপড় পরে কর্মক্ষেত্রে বেরিয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরমও বাড়ছে আনুপাতিক হারে ফলে বাসা বাড়ি ও কর্মস্থলে রাত ও দিনে ফ্যান এসি চালাতে দেখা গেছে এবং সামান্য পরিশ্রমে ঘাম ছুটছে শরীর থেকে। তবে এবছরের মতন শীত যে বিদায় নিয়েছে গরমের আগমনী ঘটেছে এবং শীত এ বছর আর জেঁকে বসবে না গরমের পারদ ক্রমান্বয় উর্ধগতি হবে। প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে ঋতু বদলালেও ঋতুর নিয়ম নীতি গতিধারা বেস পরিবর্তন হয়েছে, শীত আসলেও শীত অনুভূতি হয় না। গরমের উত্তপ্ত ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে বর্ষার মৌসুম আসলে অধিক বর্ষা এতে করে বাংলাদেশে এখন ষড়ঋতুর আবহমান স্মৃতি বিলুপ্তি হতে চলেছে বললেই চলে এখন দুই ঋতুর দেশ গ্রীষ্ম ও বর্ষা আর এ সব কিছু ঘটতে চলেছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আঘাত হানছে প্রকৃতির আসল রূপ-বৈচিত্রে।
শীতের শেষান্তে বসন্তের আগমনী বার্তা বয়ে নিয়ে আসতো প্রকৃতির পরিবর্তনে বৃক্ষ সবুজে ছেয়ে যেত পলাশ ফুটতো শিমুল ফুটতো পাখির কলতানি ও গানে মুখর হত পরিবেশ, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন শব্দ তরঙ্গ উচ্চশক্তির সম্পন্ন মোবাইল টাওয়ার অধিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ভারী যানবাহন বাতাসে সীসা সবুজ বনাঞ্চল কেটে উজাড় করা বছর বছর মাটির ঊর্বরা শক্তির স্তর কেটে বিক্রি করা সহ বিভিন্ন কারণে প্রকৃতি পরিবেশ ও প্রাকৃতিক আজ হুমকির মুখে। এসব কথা বলেছেন খুলনা বণ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় প্রধান কর্তা।এদিকে আবার খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞ কর্তাগণ বর্তমান আবহাওয়ার অবয়বলীলা ও প্রতিকূলতার সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে বলেছেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশের দিকে যে রূপ ধারণ করছে তাতে করে আমরা আবহাওয়াবিদরা কোনক্রমে সময় মতন সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারছিনা কারণ মুহূর্তেের মধ্যে আবহাওয়া তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে বিক্ষিপ্ত রূপ ধারণ করছে ফলে পূর্ব ঘোষিত পূর্বাভাস কোন কাজেই লাগছে না। বেশ কয়েক বছর লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বছরের যেকোনো সময় বিক্ষিপ্তভাবে আঘাত হেনে তছনছ করছে সবুজয়ান ক্ষতি হচ্ছে মানুষের বসদভিটা জমির ফসল সাথে অধিক জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে দেখা যাচ্ছে এলাকার পর এলাকা তার মধ্য পরপর গত দুই বছর খুলনা জেলার দক্ষিণ প্রান্তে কয়রা দাকোপ বেদবুনিয়া সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে ধারণার থেকে অধিক জলোচ্ছ্বাসে আঘাত হেনেছে ফলে ভেঙ্গে গেছে অসংখ্য ভেরিবাধ তলিয়ে গেছে ফসলে জমি ভেসে গেছে মাছের ঘের সাথে প্রাণহানি ঘটেছে গৃহপালিত পশুসহ সুন্দরবনের অসংখ্য নিরীহ প্রাণীর তার মধ্য গেল বছর সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবনের নিরীহ প্রাণী হরিণের যত্রতত্র মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে এই প্রাণীটির। তাই আমাদের ধারণা আবহাওয়ার এই বৈরি লীলা ক্রমান্বয়ে যেন বিক্ষিপ্ত রূপ ধারণ করবে এবং আবহাওয়ার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারাবাহিকভাবে অপরিচিত হবে তাই পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে এক জরিপে উঠে এসেছে দেশের ১৯ টি জেলা পানির নিচে হারিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বব্যাপী যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অচিরেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে সকল সংস্থাগুলি কাজ করে আসছে সে সকল সংস্থার বিজ্ঞকর্তাদের।
তবে বিভিন্ন দেশ থেকে ভূমিকম্প ঘূর্ণিঝড় ও যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে প্রতিরোধ প্রতিকার করার জন্য বিশ্ব সংস্থা বছরের বিভিন্ন সময় দফায় দফায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে করণীয় বিষয় ভিন্ন ভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের ধারণা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বলে আমরা জেনেছি।