রুপম চাকমা বাঘাইছড়ি উপজেলা
ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী নারী প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে রাঙামাটির সাজেকে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) “নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক হও, জাতির ক্রান্তিলগ্নে সমাজ-জাতি রক্ষার সংগ্রামে নারী-বোনেরা আন্দোলনে সামিল হোন” শ্লোগানে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অমিতা চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য অপর্না চাকমা সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সুনিল ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা আহবায়ক এন্টি চাকমা। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক নন্দা চাকমা।
আলোচনা সভা শুরুতে বীর কন্যা প্রীতিলতাসহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন সকল বীর শহীদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ছবি : দেশ চ্যানেল
বক্তরা বলেন, বীর কন্যা প্রীতিলতা নিজের জাতির রক্তের বোন না হলেও আজ তার আত্মাহুতি দিনে আমরা তাকে স্মরণ করে আলোচনা করছি। কারণ তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে একজন কিংবদন্তী বিপ্লবী নারী। তিনি নিজেকে আত্মাহুতি দিতেও কার্পণ্য করেননি।
তারা আরো বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যে ক’জন নারী সাহসী ভূমিকা রেখেছেন তার মধ্যে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার অন্যতম। তিনি ১৯৩২ সালে আজকের এই দিনে মাস্টার দা সূর্যসেনের নির্দেশে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবে সশস্ত্র আক্রমণ চালান। অভিযান শেষে ফেরার সময় অভিযান শেষে ফেরার সময় তাঁর গায়ে একটি গুলি লাগে। ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কায় তিনি নিজের পকেটে থাকা পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহনন করেন। এই ইউরোপীয়ান ক্লাবে আক্রমনের ঘটনা ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত করে দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়।
বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন পিছনেও বাংলার নারীদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। আর পাহাড়ে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আমাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে আছেন কল্পনা চাকমা। অধিকারহারা মানুষের কথা বলতে গিয়ে এদেশের শাসকগোষ্ঠি আজ কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করে গুম করে রেখেছে।
বক্তারা পার্বত্য চট্গ্রামের নারীদেরকে প্রীতিলতার মতো সাহসী হয়ে শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।