আব্দুল গাফফার
শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি
নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে বগুড়ায় শেরপুরে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিথুন চক্রবর্তীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
সোমবার (১৪আগস্ট) পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন। জাতীয় পরিসেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে সহযোগিতা কামনা করেন এক তরুণী। পরে তাকে সহযোগিতার জন্য পাঠানো হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে। কিন্তু নিজের পরিচয় (ভিন্ন ধর্মাবলম্বী) বিষয়টি গোপন করে সহযোগিতার নামে ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে গড়ে তোলেন তিনি। পরবর্তীতে ওই তরুণী বগুড়ার পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায় গত ৯ আগস্ট এসআই মিথুন চক্রবর্তীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত সাতমাস আগে জেলার শেরপুর থানায় যোগদান করেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিথুন চক্রবর্তী। এরই মধ্যে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে তার সাবেক স্বামীর টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ বাধে। একপর্যায়ে জাতীয় পরিসেবা ৯৯৯-এ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এসআই মিথুন চক্রবর্তী। সেখান থেকেই ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে তার। একপর্যায়ে নিজের পরিচয় গোপন করে বিয়ের প্রলোভনে ওই তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন ভুক্তভোগী তরুণী। একপর্যায়ে বিগত ২২ জুলাই ঘটনাটি জানিয়ে জেলার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। পরে অভিযোগটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয় বলে জানা যায়। জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, মিথুন চক্রবর্তী বিগত ছয় থেকে সাত মাস শেরপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু চলতি মাসের ০১ আগস্ট এই থানা থেকে তাকে আদমদীঘি থানায় বদলি করা হয়েছে। এছাড়া মিথুন চক্রবর্তীর নামে জেলার পুলিশ সুপার বরাবরে করা এক তরুণীর অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে জানান তিনি। এদিকে আদমদিঘী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমের নিকট ঘটনাটি সম্পর্র্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, চলতি মাসের ৮আগস্ট এসআই মিথুন চক্রবর্তী আদমদীঘি থানায় যোগদান করেন। পরদিন ৯আগস্ট জেলার পুলিশ সুপারের স্বাক্ষরিত তাকে সাময়িক বরখাস্তের এক আদেশ থানায় পৌঁছালে তাকে থানা থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বগুড়া পুলিশ লাইনস্ সংযুক্ত রয়েছেন বলে জানান তিনি। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ অভিযোগ তদন্তের বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিথুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত শেষে পুলিশ সুপারের দপ্তরে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিথুন চক্রবর্তীর দাবি, অভিযোগকারী তরুণীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। অবশ্য সেটি আপস মীমাংসা হয়ে গেছে। এরপরও বিভাগীয় শাস্তি হিসেবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।